ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে একজন থেকে আক্রান্ত হতে পারে ৪০০ জন

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: মে ৯, ২০২১

সীমান্তবাংলা ডেক্স : মহামারি করোনাভাইরাসের ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি সামাল দেয়া কঠিন হয়ে যাবে বলে সতর্ক করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ। তিনি জানিয়েছেন, এই ভ্যারিয়েন্টটি খুবই ভয়াবহ। এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত একজন থেকে অল্প সময়ের মধ্যে ৪০০ জন আক্রান্ত হতে পারে।

রবিবার সেন্ট্রাল সেমিনার সাব-কমিটির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘কোভিড-১৯ আপডেট’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শারফুদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন। বিএসএমএমইউর এ-ব্লকের অডিটোরিয়ামে সেমিনারটি অনুষ্ঠিত হয়।

বিএসএমএমইউর উপাচার্য বলেন, ‘ভারতের ভ্যারিয়েন্টটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, এই ভ্যারিয়েন্টে একজন থেকে ৪০০ জন পর্যন্ত মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। দেশে এই ভ্যারিয়েন্টটি ছড়িয়ে পড়লে তা সামাল দেয়া অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়বে। এ অবস্থায় ভ্যাকসিন নেয়া, প্রয়োজনে দুটি মাস্ক পরা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’

দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজের ভ্যাকসিন কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে হতাশার কারণ নেই। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছেন। শুধু ভারত নয়, পৃথিবীর যে দেশ থেকেই অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে সেখান থেকেই তা সংগ্রহ করা হবে।’ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিনের সাফল্যের হার শতকরা ৯৮ শতাংশ বলেও জানান তিনি।

বিএসএমএমইউর অটোল্যারিংগোলজি-হেড অ্যান্ড নেক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সিদ্দিকী সেমিনারটিতে সভাপতিত্ব করেন। সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) মুহাম্মদ রফিকুল আলম, উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) জাহিদ হোসেন, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) এ কে এম মোশাররফ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আতিকুর রহমান।

প্যানেল এক্সপার্ট হিসেবে অংশগ্রহণ করেন সাবেক উপাচার্য নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসির অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, ইন্টারনাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান সোহেল মাহমুদ আরাফাত, অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চেয়ারম্যান একেএম আখতারুজ্জামান, ভাইরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাইফ উলাহ মুন্সী।

সেমিনারে নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ভ্যাকসিন নিলেও অন্যের সুরক্ষার জন্য মাস্ক পরতে হবে। ৯৯ ভাগ নয়, সবার জন্য শত ভাগ মাস্ক পরা অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে।’

এবিএম আব্দুল্লাহ বলেন, ‘করোনাভাইরাস যা শুধু ফুসফুস নয়, হার্ট, কিডনি, লিভার থেকে শুরু করে শরীরের সব অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই ভাইরাসটি প্রতিরোধ জরুরি। এজন্য মাস্ক পরা, হাত ধোয়া এবং সামাজিক দূরত্ব অবশ্যই মেনে চলতে হবে।’

ভ্যাকসিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সেদিন বেশি দূরে নয়, যেদিন দেশেই কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন উৎপাদন হবে এবং দেশের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি করা সম্ভব হবে।’

সেমিনারে জানানো হয়, ভাইরাসের জেনেটিক মিউটেশনের কারণে বিভিন্ন ধরনের ভ্যারিয়েন্টের উৎপত্তি হয়। এর মধ্যে কোনো কোনো ভ্যারিয়েন্ট সংক্রমণ, ভোগান্তি, জটিলতা ও মৃত্যুহারের বিবেচনায় অনেক শক্তিশালী হিসেবে লক্ষ্য করা যায়। ভ্যারিয়েন্টগুলো বিভিন্ন মাত্রার শক্তিশালী হলেও ভ্যাকসিন অবশ্যই নিতে হবে। কারণ কোনো ভ্যারিয়েন্টই ভ্যাকসিন থেকে সম্পূর্ণ প্রতিরোধী নয়। ভ্যাকসিন নিলে শরীরে যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয় তার মাধ্যমে সবধরনের ভ্যারিয়েন্ট থেকে কমবেশি রক্ষা পাওয়া যাবে।

০৯মে/এএ/জেবি/এডমিন/ইবনে

সংবাদটি শেয়ার করুন