বড়হাতিয়ায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে আবাদি জমি

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুন ১৬, ২০২২

 

লোহাগড়া প্রতিনিধি ;

চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নে মনুফকির বাজারের পশ্চিমে করাতকল সংলগ্নে থমতমিয়া খাল থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের মহোৎসব চলছে। বালু উত্তোলনের ফলে খালের-পার্শ্বেবর্তী আবাদি জমি গুলো হুমকির মুখে পড়ছে।

বালু ব্যবসায়ীরা প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয় লোকজন তাদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযোগ দিতেও সাহস পাচ্ছেন না। তবে-সংশ্লিষ্ট সবাইকে ম্যানেজ করেই খাল থেকে বালু উত্তোলন করতেছে বলে জানান দস্যুরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লোহাগাড়া উপজেলার বড়হাতিয়া ইউনিয়নের মনুফকির হাট বাজারের পশ্চিমে কুমিরাঘানা বায়তুশ শরফ সড়কের করাতকল সংলগ্নে থমতমিয়া খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এই খাল থেকে দিন-রাত বিরামহীন ভাবে বালুদস্যু শ্রমিক দিয়ে বালু ও মাটি কেটে অবৈধ ব্যবসা করে যাচ্ছে। আর বালু ও মাটি বিক্রির জন্য তারা সরকারের কাছথেকে কোনো অনুমতিও নেননি বলেও জানান এলাকাবাসীরা। বালু উত্তোলন ফলে এলাকার আবাদি চাষাবাদ জমি গুলো হুমকিতে পড়ছে। প্রতিদিন ট্রাকে করে অবৈধভাবে বালু বহনের কারণে সড়কেরও ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।

এছাড়াও মেশিন দিয়ে বিভিন্ন জায়গা হতে খাল,ছড়া, কৃষি জমি ও ঝিরি থেকে বালু তুলে বিভিন্ন পয়েন্ট করে কৃষি জমিতে স্তূপ রেখে বেআইনি ভাবে ব্যবসা চলায় যাচ্ছে। কেউ তাদের ভয়ে প্রতিবাদ ও মুখ খুলতে চাচ্ছে না। স্থানীয় এক শ্রেণীর প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এইসব ব্যবসার পরিচালনা করে যাচ্ছেন বলেও জানান স্থানীয়রা। দীর্ঘদিন ধরে তারা এ ব্যবসা করে আসছে এবং বালুভর্তি ট্রাক গুলো বিভিন্ন সড়ক দিয়ে দাপিয়ে চলছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এই নিয়ে কোনো ‘মাথাব্যথা’ নেই বলে জানান স্থানীয়রা।

স্থানীয় এক পল্লী ডাক্তার জানান, সড়কটি এখন বালু সহ বিভিন্ন ধরনের অবৈধ ব্যবসায়ীদের দখলে। বালুভর্তি খোলা ট্রাকের বেপরোয়া চলাচলের কারণে বর্তমানে শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের জীবনের ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা কবলে প্রাণ যাচ্ছে। বালু সহ বিভিন্ন মালবাহী ট্রাকের অবাধ চলাচল করার কারণে শিক্ষার্থীসহ পথচারীদের বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কৃষক জানান, প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে থমতমিয়া খাল থেকে। কোনো ভাবেই বন্ধ হচ্ছে না বালু উত্তোলন। এ বালু দিয়ে রাস্তা সহ বিভিন্ন স্থানে পুকুর ও জলাশয় ভরাট কাজ সহ ব্যবসা করা হচ্ছে। সেখানে ভবনেও হচ্ছে। খাল গভীর করে মাটি কাটা ও বালু উত্তোলনের ফলে প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে তার খেসারত দিতে হয় খালের ধারের জমির মালিকদের। ক্ষতি হয় ফসলি জমির। অনেক গাছপালা যায় খালের গর্ভে।

ওই এলাকাবাসী দাবী, অবিলম্বে এ থমতমিয়া খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনতে হবে। আর প্রশাসনের কেউ এই চক্রের সঙ্গে জড়িত থেকে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে কি না,সেটাও তদন্ত করার দাবী জানান তারা। এলাকাবাসীর পক্ষেথেকে মৌখিক ভাবে উপজেলা প্রশাসনকে একাধিক বার বলার পরেও কোন ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলেও জানান তারা।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, উপজেলা প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ এই বালু খেকোদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জোর দাবী জানান এলাকার জনসাধারণ।