ডেস্ক নিউজ ;
বর্ষাকাল ও বন্যার সময় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির আশঙ্কা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান একেএম হাফিজ আক্তার।
মঙ্গলবার (২১ জুন) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডে অবস্থিত ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে উত্তরখানের একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনার আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, ডাকাতরা এখন অনেক কৌশলী হয়ে গেছে। তারা জানে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাদের সন্ধান পেয়ে যাব, তাই তারা কোনো ডিভাইস ব্যবহার করে না। তবে আমরাও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদের গ্রেপ্তার করছি। ডাকাতদের অপতৎপরতা কমাতে আমাদের ডিবির টিম দেশের বিভিন্ন এলাকার ডাকাত দলের সর্দারকে গ্রেপ্তার করেছে। ডাকাতি রোধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। যেহেতু সামনে বর্ষাকাল আরও ডাকাতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
একেএম হাফিজ আক্তার বলেন, বাসে ডাকাতি হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমরা প্রচুর ডাকাত গ্রেপ্তার করেছি। এর ফলে গত মে মাসে কোনো ডাকাতির মামলা রুজু হয়নি এবং ডাকাতির ঘটনাও দেখা যায়নি বাসে।
সংবাদ সম্মেলনে উত্তরখানের একটি বাসায় ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে হাফিজ আক্তার বলেন, গত এপ্রিল মাসে রাজধানীর উত্তরখান এলাকায় একটি বাসায় ডাকাতি হয়েছিল। এই ঘটনায় ডাকাত দলটি বাসাটি থেকে ৩ লাখ ৩১ হাজার টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ মোট ৮ লাখ ৩৭ হাজার ৭৫০ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় বাসার মালিক মো. আহসান উদ্দিন বাদী হয়ে উত্তরখান থানায় একটি মামলা করেন। মামলা হওয়ার পর ডিবি উত্তরা বিভাগ তদন্ত শুরু করেন।
তিনি বলেন, তদন্ত শুরু হলেও ডাকাত দলটির কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। ডাকাতির পর তারা নিজেদের মধ্যেও যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। ডাকাতির পর তারা দীর্ঘদিন কোনো ধরনের ডিভাইস চালায়নি। এক প্রকার ট্রেসলেস হয়ে গিয়েছিল তারা। তবে তদন্তের এক পর্যায়ে গত সোমবার (২০ জুন) গাজীপুরের নোয়াগাঁও এলাকায় এই ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি উত্তরা বিভাগ।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মোঃ জাকির হোসেন (৩২), মোঃ সবুজ (৩৪), মোঃ ওমর (৩০) ও মোঃ ওসমান গনি স্বপ্ন (৪০)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ১টি স্বর্ণের চেইন, নগদ ১৪ হাজার টাকা, ১টি চাপাতি, ২টি লিভার, ২টি সেলাই রেঞ্জ, ১টি স্ক্রু ডাইভার ও ১টি চাকু জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের সকলের বাড়ি দক্ষিণবঙ্গে। তারা ঢাকার আশপাশে ডাকাতি করে পালিয়ে যেতো দক্ষিণবঙ্গে। উত্তরখানের মামলা ছাড়াও গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা রয়েছে।
হাফিজ আক্তার বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে জাকির হচ্ছে এই ডাকাত দলের মহাজন। সে-ই সারা বছর এই ডাকাত দলের সদস্যদের পালতো। ডাকাত দলের সদস্যরা সবাই মাদকাসক্ত। জাকির তাদের মাদক সেবনের টাকা দিতো আবার সারা বছর তাদের সংসার চালানোর টাকাও জাকির দিত। তবে ডাকাতির পর সব মালামাল ও টাকা পয়সা জাকির নিয়ে নিত। এর বিনিময়েই জাকির তাদের সারা বছর পালতো অনেকটা মহাজনি ব্যবসার মতো।
বাস ডাকাতির পর এখন পর্যন্ত কত জন ডাকাত গ্রেপ্তার হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ডিবি প্রধান বলেন, বাস ডাকাতির ঘটনার পর এখন পর্যন্ত শতাধিক ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, সারা দিন ফুডপান্ডায় বা ভ্যান চালায়, আর রাতে ডাকাতি করে বেড়ায় তারা।