ন্যায়বিচারের আশায় বুক বেঁধে আছে ফেলানীর পরিবার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৭, ২০২০

বহুল আলোচিত ফেলানী খাতুন হত্যার ৯ বছরপূর্তি মঙ্গলবার। দীর্ঘসূত্রতার মধ্যদিয়ে ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে চলছে তার বিচারিক কার্যক্রম।

২০১১ সালের এই দিনে ভারতীয় বিএসএফের গুলিতে নির্মম হত্যার শিকার ফেলানীর লাশ কাঁটাতারে ঝুলে ছিল দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘণ্টা। প্রতিবাদী হয়ে উঠেছিল গণমাধ্যমসহ বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলো। তীব্র সমালোচনার মুখে পরতে হয় ভারতকে। ফেলানীর পরিবার এখনও বুক বেঁধে আছে ন্যায়বিচারের আশায়।

জানা গেছে, কাজের সন্ধানে অবৈধভাবে মেয়েকে নিয়ে ভারতে পারি জমিয়েছিল ফেলানী খাতুন ও তার বাবা নুরুল ইসলাম নুরু। সেখানে কয়েক বছর থাকার পর কিশোরী মেয়েকে নিজ দেশে বিয়ের উদ্দেশে রওয়ানা দিয়েছিলেন।

সে দিন ছিল ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি শুক্রবার। ভোর ৬টার দিকে ফুলবাড়ি উপজেলার অনন্তপুর সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টা করেন বাবা ও মেয়ে। বাবা নুরুল হক কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে পার হতে পারলেও মেয়ে ফেলানী কাঁটাতারে উঠতেই ভারতীয় বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ গুলি চালান। এতে কাঁটাতারেই ঢলে পরে ফেলানীর নিথর দেহ। সেখানে সাড়ে ৪ ঘণ্টা ঝুলে থাকার পর তার লাশ নিয়ে যায় বিএসএফ।

এই ঘটনায় বিশ্বব্যাপী তোলপাড় শুরু হলে ৩০ ঘণ্টা পর ওই বছরের ৮ জানুয়ারি বিজিবির কাছে লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ।

দীর্ঘ ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার সম্পন্ন হয়নি। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করা হলেও তা বারবার পিছিয়ে দেয়া হয়।

দীর্ঘদিন ধরে ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচার না হওয়ায় পরিবারসহ হতাশ স্বজনরাও।

২০১৫ সালের ১৩ জুলাই ভারতীয় মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) ফেলানী খাতুন হত্যার বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবিতে দেশের সুপ্রিম কোর্টে রিট আবেদন করে।

২০১৭ সালের ২৫ অক্টোবর শুনানির পর ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে বারবার তারিখ পিছিয়ে যায়। ফলে থমকে গেছে ফেলানী খাতুন হত্যার সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণের দাবি।

ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলাম নুরু ও মা জাহানারা বেগম জানান, ভারতীয় সর্বোচ্চ আদালতে ফেলানী হত্যার বিচারিক কার্যক্রম ঝুলে থাকায় আমরা হতাশ। আমরা ন্যায়বিচারের জন্য দীর্ঘ ৯ বছর ধরে অপেক্ষা করছি।

এ দিকে ফেলানী হত্যার বিচার কার্যক্রম নিয়ে কুড়িগ্রামের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এসএম আব্রাহাম লিংকন জানান, ভারতীয় সুপ্রিম কোর্টে ফেলানী হত্যাকাণ্ডের রিট এ বছর এখনও তালিকাভুক্ত না হওয়ায় কিছুটা বিলম্বিত হতে পারে বিচারিক কাজ।

দ্রুত ফেলানী হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় হলে উভয় দেশের সীমান্তের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে বলে মনে করেন তিনি।