জাপানি কোম্পানি বন্ধ করল মিয়ানমারে ‘গোপন’ সামরিক অর্থায়ন

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৪, ২০২০

সীমান্তবাংলা ডেক্সঃ মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীতে অর্থায়নের অভিযোগে দেশটির দুটি বিয়ার কোম্পানি ও ইকোনমিক হোল্ডিংস লিমিটেডের (এমইএইচএল) বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে জাপানেরমাল্টিন্যাশনাল বিয়ার ফার্ম কিরিন হোল্ডিংস। প্রাথমিকভাবে লভ্যাংশ দেয়া বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শনিবার (১৪ নভেম্বর) জাপানের স্থানীয় গণমাধ্যম এ খবর প্রকাশ করেছে।

এ বছরের সেপ্টেম্বরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে আন্তর্জাতিক ব্যবসা কীভাবে মিয়ানমারের সামরিক অর্থায়নের সঙ্গে যুক্ত তার বিস্তারিত তুলে ধরে। ওই প্রতিবেদনের জের ধরে জাপানি কোম্পানি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। ওই প্রতিবেদনে কিছু ইউনিট আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনে প্রত্যক্ষভাবে দায়ী বলে উল্লেখ করা হয়। এমইএইচএল থেকে প্রাপ্ত তথ্য ও শেয়ারহোল্ডারদের অফিসিয়ালি ফাঁস হওয়া নথি বিশ্লেষণ করে তদন্ত প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়।
কিরিনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘মিয়ানমারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ব্যবসায়িক পরিবেশের অভাব বিবেচনা করে এই সাময়িক স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে।’

জাপানি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদন প্রকাশের আগে এ বিষয়ে পরিষ্কার তথ্য ছিল না জাপানি কোম্পানি কিরিন হোল্ডিংসের কাছে। অগোচরেই রোহিঙ্গা গণহত্যাসহ মানবাধিকার লঙ্ঘণে মিয়ানমার আর্মিকে অর্থায়ন করে যাচ্ছিল দেশটির বেশ কয়েকটি কোম্পানি। এসব কোম্পানির সঙ্গে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক সম্পর্ক এমনকি মালিকানাও রয়েছে। যার মধ্যে জাপানের কিরিন হোল্ডিংস অন্যতম।
জুনে নাগরিক সমাজের তীব্র সমালোচনার মুখোমুখি হওয়ার পর মিয়ানমার ব্রুওয়ারি লিমিটেড ও ম্যান্ডলে ব্রুওয়ারি লিমিটেড, এই দুই যৌথ-উদ্যোগ তদন্তের জন্য ‘ডেলোয়েট’ নামের একটি পরামর্শক সংস্থাকে নিয়োগ দেয় কিরিন। এমইএইচএল’র শেয়ারহোল্ডার রেকর্ডে দেখা গেছে, দেশটির সামরিক ইউনিটগুলো এমইএইচএল’র প্রায় এক তৃতীয়াংশ শেয়ারের মালিক।
১৯৯০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে শেয়ারহোল্ডারদের প্রাপ্ত বার্ষিক লভ্যাংশ প্রদানের তথ্য অনুযায়ী, এমইএইচএল এই ২০ বছরে মোট ১৮ বিলিয়ন ডলার লভ্যাংশ দিয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার সামরিক ইউনিটগুলোতে স্থানান্তরিত হয়। গত ১১ নভেম্বর এক বিবৃতিতে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানায়, ডেলোয়েটের তদন্তের ভিত্তিতে কিরিনের উচিত এমইএইচএল’র সঙ্গে সব ব্যবসায়িক সম্পর্ক দায়িত্ব নিয়ে শেষ করা।
সেপ্টেম্বরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত গবেষণায় দেখা যায়, এমইএইচএল’র ব্যবসায়িক অংশীদার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ আছে। এমইএইচএল মিয়ানমারে যৌথ উদ্যোগ বা লাভ-ভাগাভাগির চুক্তি প্রতিষ্ঠায় এই ব্যবসায়িক অংশীদারদের সহযোগিতায় কাজ করে। যখন এগুলো থেকে লাভ হয়, তারা এমইএইচএলকে শেয়ারহোল্ডার হিসেবে সরবরাহ করে। পরে এমইএইচএল তার নিজস্ব শেয়ারহোল্ডারদের লভ্যাংশ বিতরণ করে।