চুয়াডাঙ্গায় কৃষি অফিসে তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিককে পেটানোর হুমকি!

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুলাই ২৫, ২০২২

ডেস্ক নিউজ ;

এই দরজাটা দাও তো, একটা লাঠি নিয়ে এসো তো বড় দেখে। উল্টা-পাল্টা কথা বলবেন না। আপনি আমাকে চেনেন। এই এ দিকে আসো দরজাটা বন্ধ করো উল্টা-পাল্টা কথা বললে আমি পেটাব। কথা গুলো বলেছেন দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান।

এভাবেই তিনি নিজ অফিস কক্ষে হুমকি দেন দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি শামীম রেজাকে। ২০২১-২২ অর্থবছরে রবি মৌসুমের ফলোআপ পিঁয়াজ বীজের তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকের পর ক্ষিপ্ত হয়ে হুমকি দিতে থাকেন কৃষি কর্মকর্তা।

এ ঘটনায় সাংবাদিক শামীম রেজা বিকেলে দামুড়হুদা থানায় কৃষি অফিসার মো. মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। সাংবাদিক শামীম রেজা দামুড়হুদা উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের আশরাফ আলীর ছেলে।

অভিযোগের সূত্রে জানা যায়, রোববার দুপুরে শামীম রেজা দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে যান। এ সময় ২০২১-২২ অর্থবছরের রাজস্ব প্রকল্পের রবি মৌসুমের পিঁয়াজের ফলোআপ বীজের তথ্য চান। তথ্য চাওয়ার পরই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান। বিষয়টি ঢাকা অফিসকে জানালে তাদের সহায়তায় সেখান থেকে শামীম রেজাকে উদ্ধার করা হয়।

শামীম রেজা বলেন, মো. মনিরুজ্জামান একজন কর্মকর্তা হয়ে এ ধরনের আচরণ করবেন আমি ভাবতে পারিনি। তথ্য চাওয়ায় তিনি আমার ওপর কোনো কারণ ছাড়াই ক্ষিপ্ত হয়ে এ ধরনের আচরণ করেন। আমাদের সঙ্গে যদি এ ধরনের আচরণ করেন তা হলে অন্যদের সঙ্গে কী করবেন?

এদিকে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, এর আগে একদিন তিনি টাকার কথা বলেন। শামীম নামের সাংবাদিক আজকে অফিসে আসলে বিষয়টি ওসি সাহেবকে জানিয়েছি। আজকেও সে টাকার সুর তুলছিল। সাংবাদিকের হুমকির বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

দামুড়হুদা থানার ওসি ফেরদৌস ওয়াহিদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, থানায় তো অনেক জিডি হয়। কোন জিডির কথা বলছেন। একজন  সাংবাদিক একটা জিডি করেছে। জিডির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

দামুড়হুদা প্রেস ক্লাবের সভাপতি এম নুরুন নবী বলেন, কৃষি অফিসার সবার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তথ্য চাওয়ার অধিকার সবার আছে। তিনি তথ্য দিতে চান না কোনো সময়। সব প্রকল্পে অনিয়ম করে কৃষি অফিসার। দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি অফিস। কৃষি অফিসারের বিরুদ্ধে সবার সোচ্চার হতে হবে এখনই। কৃষি কর্মকর্তা আমারও হাত কেটে নেয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। সাংবাদিক তথ্য চাইলেই তার চোখে অপরাধী হয়ে যায়।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিফতরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, বিষয়টি জানার পর তার কাছে জিজ্ঞাসা করেছি। তিনি অস্বীকার করেছেন বিষয়টি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে দায় এড়িয়ে যান তিনি।

দামুড়হুদা প্রেসক্লাবের সভাপতি এম নুরুন নবী কয়েক মাস আগে দামুড়হুদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কাছে তথ্য চান। তথ্য চাওয়ায় প্রেসক্লাব সভাপতির হাত কেটে নেয়ার হুমকি দেন কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান। সে সময় উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মধ্যস্তায় ক্ষমা চেয়ে পার পান তিনি।