ছারপোকা চালক রায়হানের কোটিপতি বনে যাওয়া আর উখিয়া টেকনাফের নব্য ধনকুবেরদের আয়ের উৎস তদন্তের দাবী সচেতন মহলের

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুন ১, ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:
ছারপোকা গাড়ী চালক থেকে কোটি পতি। অবিশ্বাস্য লাগছে? না সত্যিই এমনটি ঘঠেছে, ভাবছেন কিভাবে! তাহলে বলবো এদেশে সবই সম্ভব। কোন আলাদীনের চেরাগ ছাড়াই একজন ছারপোকা গাড়ীর চালক আজ আলীশান জীবন কাটাচ্ছে, যে ব্যক্তিটির একদিন নুন আনতে পান্তা ফুরাতো, এক বছরে আগে ও ছারপোকা গাড়ি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে পরিবারের হাল ধরেছিলেন। তিনিই এখন দামী মোটরসাইকেল নিয়ে আলিশান ভাবে চলা-ফেরা করছেন। যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পেয়েছেন এই যুবক। যার কথা বলছি তিনি আর কেউ নন, কক্সবাজার সদরের ঈদগাঁও ইউনিয়নের ভোমারিয়া ঘোনা এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের মাষ্টার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রায়হানের কথা।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, এই যুবক এক বছর আগে ছারপোকা গাড়ি চালাতেন। তার দুই বোন চাকরি করতেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে। ওই সময় কোন ভাবে পরিচয় হয় রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝি শওকত ইসলামের সাথে। রায়হানের বোনের সাথে পরিচয় হওয়ার সুবাধে ক্যাম্প ছেড়ে চলে আসেন ঈদগাাঁও ভোমারিয়া ঘোনায়। শুধু শওকত নয় এসেছেন সুন্দরী স্ত্রী মরজিনাও। দীর্ঘ বছর ভোমারিয়ায় ঘোনায় রায়হানের বাড়ির পেছনে একটি বাড়িতে থাকার জন্য ব্যবস্থা করেন রায়হান। ইমাম হোসেন নামের এক প্রফেসরের বাড়িতে থাকলেও খাবার-দাবার খেতেন রায়হানের বাড়িতে।

সূত্রের দাবী, দীর্ঘ বছর ভোমারিয়া ঘোনা এলাকায় রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছেড়ে আসা শওকত ইসলাম শ্রমিক ভেসে চলছিলেন। একদিন একটি ঘটনা সম্পর্কে বিচার যায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিমের কাছে। ওই সময় তিনি তার এলাকায় রোহিঙ্গা বসবাসের কথা জানতে পেরে তাকে ক্যাম্পে চলে যেতে বাধ্য করেন। ওই সময় সেখান থেকে এসে কক্সবাজার শহরে আলিশান ভাবে জীবন যাপন করেন শওকত ইসলাম এবং তার স্ত্রী মর্জিনা। মোহাম্মদ রায়হান সকল সমস্যা সমাধান করেও দিতেন কক্সবাজার শহরে। সেখান থেকে চলে যায় চট্টগ্রামে। এরই চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার সি ব্লকের একটি বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫ হাজার ৩০০ ইয়াবা এবং নগদ এক কোটি ১৭ লাখ টাকাসহ শওকত এবং তার স্ত্রীকে গেফতার করেন র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) ৭ সদস্যরা। গেলো বছরের ৮ নভেম্বর তারা শওকত ইসলাম এবং তার স্ত্রী মর্জিনা ধরা পড়লেও তাদের প্রধান সহযোগী ভোমারিয়া ঘোনার মাষ্টার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রায়হান চালিয়ে যাচ্ছেন অবৈধ ব্যবসা।
ভোমারিয়ার ঘোনার নির্ভর যোগ্য সূত্র দাবী করছে, সম্প্রতি আড়াই লাখ টাকা দিয়ে মোটর সাইকেল কিনে চলা-ফেরা করছেন রাজার ভেসে। তার মোটর সাইকেলের হর্ণের শব্দে যেন অতিষ্ট এলাকাবাসী। এলাকায় তার নাম দিয়েছে ‘রাজ ভাই’। বাবার অল্প বেতনে চাকরি করা সংসারে ভীশন অভাবে থাকা সংসারে যেন এখন রাজার হাল চলছে।

শুধু রায়হান কেনো, কক্সবাজার জেলার সদর, উখিয়া, টেকনাফে এ ধরনের অসংখ্য ব্যক্তি আছে যাদের এক সময় খুবই নির্মম দিন গেলেও আজ তারা সমাজপতি, কেউ হাসপাতাল সহ বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী, মানবাধিকার সংগঠনের হর্তাকর্তা। আবার কেউ কেউ হারামের টাকা হালাল করতে মুরগীর ফার্ম থেকে শুরু করে, ঔষধের দোকান সহ পারছেনা পাবলিক টয়লেট ও খুলে বসতে। উখিয়া টেকনাফের প্রধান সড়ক দিয়ে যাওয়ার পথে সড়কের দুপাশে দেখা যাবে অসংখ্য আলিশান দালান। এখন প্রশ্ন হলো হঠাৎ করে এতো টাকা পেলো কোথায় এসব ধনকুবেরেরা। স্থানীয় গোয়েন্দা সংস্থা,দুদকসহ প্রশাসনের কাছে এসব বিষয়ে তদন্ত দাবী করেছে স্থানীয় সচেতন মহল।

সীমান্তবাংলা / ১ জুন ২০২১