সীমান্তবাংলা ডেক্স : নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষে সংঘর্ষের ঘটনায় জড়িতদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। শুক্রবার দিনভর অভিযান চালিয়ে মুছাপুর ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও মেয়র মির্জা কাদেরের সমর্থক ইকবাল চৌধুরীসহ আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবেলায় সতর্ক আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
সংঘর্ষের ঘটনায় গ্রেপ্তার আ.লীগ নেতা মিজানুর রহমান বাদলকে শুক্রবার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ১নং আমলি আদালতে হাজির করা হলে আদালতের বিচারক সোয়েব উদ্দিন খান শুনানি শেষে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
থানায় মামলা না নেয়ায় আদালতে যাবেন নিহতের ভাই
এদিকে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সিএনজি অটোরিকশাচালক আলাউদ্দিন। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে কাদের মির্জাসহ ১৬৪ জনের বিরুদ্ধে রাতে মামলা করতে গেলে নিহতের ছোট ভাই এমদাদকে ফিরিয়ে দেয় থানাপুলিশ।
এ ব্যাপারে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আমার ভায়ের হত্যার ঘটনার এজাহারে আবদুল কাদের মির্জাকে প্রধান আসামি করায় পুলিশ আমার মামলাটি রেকর্ড করেনি। এরমধ্যে পুলিশ এজাহার থেকে কাদের মির্জার নাম বাদ দিতে আমাকে চাপ দেয়। কিন্তু কোনো চাপের কাছে আমি নত হবো না। আমি শনিবার আদালতে গিয়ে সেখানে মামলা করবো।
বাদলের মুক্তি ও কাদের মির্জার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি পরিবারের
শুক্রবার বিকাল সাড়ে চারটায় নিজ বাড়িতে মিজানুর রহমান বাদলের মুক্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে তার পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, বাদলের মা আরাধনী বেগম, স্ত্রী সেলিনা আক্তার কাকলি, বোন ফাতেমা আক্তার বকুল ও আমেনা বেগম।
বক্তারা বলেন, মিজানুর রহমান বাদল উপজেলার একজন সফল চেয়ারম্যান। চট্টগ্রাম বিভাগে সেরা চেয়ারম্যান হয়েছিলেন। তার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি আ.লীগ পরিবারের সন্তান।
কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা সত্যবচনের নামে বাদলসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলে আসছেন। তাদের অভিযোগ মির্জার নেতৃত্বে চাপরাশিরহাটে সাংবাদিক বুরহান উদ্দিন মুজাক্কির ও বসুরহাট বাজারে তাদের প্রতিবেশী আলাউদ্দিনকে হত্যা করা হয়েছে।
অথচ পুলিশ হত্যাকারী মির্জা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে কোনো মামলা না নিয়ে উল্টো বাদলকে গ্রেপ্তার করেছে। আমরা প্রধানমন্ত্রী ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কাছে আবেদন করছি হত্যার ঘটনা সঠিক তদন্ত করে বাদলকে মুক্তি দিয়ে মির্জার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য।
চলছে পুলিশের অভিযান
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহিদুল হক রনি জানান, সংঘর্ষে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধারে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শুক্রবার বিকালে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মুছাপুর ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইকবাল চৌধুরীসহ নতুন আরও ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এ নিয়ে পৃথক মামলায় ৩৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুক্রবার ভোরে বসুরহাট রূপালী চত্বর থেকে সাতটি ককটেল ও ২৬টি গাবের লাঠি উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পৌর এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। টহলে আছে র্যাব সদস্যরা।
১২মার্চ/ইএস/এডমিন/ইবনে