করোনা সংক্রমনে দেশে আরো ১১২ জনের মৃত্যু, ৭০/৮০ শতাংশই ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট আক্রান্ত

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২১

নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
করোনাভাইরাস সংক্রমিত হয়ে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরো ১১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে করোনায় দেশে মোট মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ১৪ হাজার ৩৮৮ জনে।
এছাড়া দেশে গত ২৪ ঘণ্টার নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে আরো ৭৬৬৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট করোনা শনাক্ত হলো ৯ লাখ ৪ হাজার ৪৩৬ জনের।
মঙ্গলবার বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মোট ৩১ হাজার ৯৮২ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার ২৩ দশমিক ৯৭ শতাংশ।
করোনায় আজকের দিনে মৃতদের মধ্যে রয়েছেন খুলনায় সবচেয়ে বেশি ৩৫ জন । এছাড়া ঢাকায় ২২ জন, চট্টগ্রামে ১৬, রাজশাহীতে ২১, বরিশালে ৩, সিলেটে ১, রংপুরে ১০ এবং ময়মনসিংহে ৪ জন।

স্বাস্থ অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়, দেশে করোনার ভারতীয় বা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। বাড়ছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা মানুষের মধ্যে। একদিনে শনাক্তের হার প্রায় ১৯ শতাংশে পৌঁছেছে। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা সংস্থা-আইসিডিডিআর,বি’র এক গবেষণায় দেখা গেছে, রাজধানীতে শনাক্ত হওয়া করোনা রোগীদের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশই ডেল্টা বা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত।
করোনাভাইরাসের মহামারিতে এখন দেশে একদিকে টিকার সংকট আর অন্যদিকে ডেল্টা বা ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ায় জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি নিয়ে আবার উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। সীমান্তবর্তী জেলাগুলোর স্থানীয় হাসপাতালগুলোতে করোনা রোগী ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি হওয়ায় চিকিৎসা ব্যবস্থাও ব্যাহত হচ্ছে।

হাসপাতাল গুলোতে পর্যাপ্ত সেবা না পেয়ে ঢাকার দিকে ছুটছেন করোনা রোগীরা। ঢাকাতেও ক্রমশ বাড়ছে সংক্রমণ। ঢাকা জেলায় গত কয়েকদিন করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে বেশি। ঢাকা বিভাগের অন্যান্য জেলায়ও একই চিত্র। জনস্বাস্থ্যবিদরা ঢাকায় করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের আশঙ্কা করছেন।

কক্সবাজারে মানা হচ্ছেনা স্বাস্থ্যবিধি;
সম্প্রতি কক্সবাজারে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করলেও সাধারণ মানুষের মধ্যে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্ব রক্ষাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলায় আগের চেয়ে বেশি অনীহা দেখা গেছে। মাস্ক ছাড়াই বাজারে ঘুরাফেরা করছেন অনেকে। বেশিরভাগ দোকান ও শপিং সেন্টারে ঘুরে দেখা গেছে বিক্রেতাদের মধ্যেও রয়েছে মাস্ক না পরার প্রবণতা। শহরের অলিগলিতে কোন স্বাস্থ্যবিধি মানার বালাই নেই। সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনা থাকলেও তা কার্যকরে সরকারি কোনও উদ্যোগও নেই মাঠ পর্যায়ে। তবে সীমিত পরিসরে লকডাউনের ঘোষনা থাকলে ও আজ কক্সবাজার শহরে লকডাউন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের কড়াকড়ি ছিলো চোখে পড়ার মতো। মোড়ে মোড়ে বসানো হয়েছে তল্লাশি চৌকি। যেখানেই মাষ্ক ছাড়া কাউকে পাওয়া যাচ্ছে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

সমপ্রতি আইইডিসিআর’র পরিচালিত জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের নমুনা পরীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের ৮০ শতাংশই ভারতীয় (ডেল্টা) ভ্যারিয়েন্ট। গত ১৬ই মে বাংলাদেশে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশিতের পর থেকে আইইডিসিআর ও আইদেশী এ পর্যন্ত ৫০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং সম্পন্ন করেছে। এসব নমুনার মধ্যে ৪০টি (৮০ শতাংশ) নমুনায় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট, ৮টি (১৬ শতাংশ) নমুনায় বিটা ভ্যারিয়েন্ট (সাউথ আফ্রিকান ভ্যারিয়েন্ট) শনাক্ত হয়েছে। মিলেছে একটি অজানা ভ্যারিয়েন্টেরও। আইইডিসিআর’র পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, সতর্কতা এখন আরও বাড়ানো দরকার। যে কোনো ভ্যারিয়েন্টের থেকে এটার ছড়ানোর ক্ষমতা কিন্তু বেশি। সেক্ষেত্রে সাবধানতাটা আমাদের আরও বেশি পালন করতে হবে। যেখানে কিন্তু আমরা কোনো রকমের সচেতনতা কারো মধ্যে দেখছি না সেইভাবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টটিকে ‘উদ্বেগের ভ্যারিয়েন্ট’- বলে অভিহিত করেছে।

সীমান্তবাংলা / ২৯ জুন ২০২১