উন্নয়ন আর অবমুল্যায়নের গ্যাঁড়াকলে কক্সবাজার। পরিত্রান পাবে কি?

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২০

শাহীন মঈনুদ্দীনঃ রূপের নগরী, স্বাস্থ্যের নগরী, সৌন্দর্য্যের নগরী কক্সবাজার আজ হারাতে বসেছে তার অপার সৌন্দর্য্য। চীরচেনা সুন্দরী কক্সবাজারকে চেনেন না এমন খুব কম দেশই আছে বলে মনে হয় পৃথিবীতে। যে কারনে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত হতে একটু শান্তির নিঃশ্বাস নেয়ার জন্য ছুঠে আসেন পর্যটকের দল। এক কথায় বাংলাদেশের জন্য গর্ব করার মতো একটি অঞ্চল কক্সবাজার। এখানে পর্যটকদের বিনোদনের জন্য গড়ে উঠেছে অসংখ্য ভি আই পি মানের হোটেল, রেস্তোরা, পার্ক,ষ্টেডিয়াম সহ অনেক অনেক কিছু। কক্সবাজার বিন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে উন্নিত করার কাজও চলমান রয়েছে। দেশীয় পর্যটকদের আসা যাওয়া সহজ করার জন্য দীর্ঘ রেল লাইন স্থাপনের কাজ ও প্রায় শেষের দিকে।
কিন্তু উন্নয়ন যেমন থেমে নেই, সমস্যারও তেমনি অন্ত নেই। কক্সবাজারের লিংক রোড থেকে শুরু করে পুরো কক্সবাজারের শহরের ভেতরের সড়কের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। শহরের বাজার ঘাটার রাস্তাটি দীর্ঘ এক যুগেও বিন্দুমাত্র পরিবর্তনের ছোঁয়া পায়নি। এই সব সড়কের অবস্থা এতোটাই খানাখন্দকে পুর্ন যে, কোন প্রসব ব্যদনায় কাঁতর মহিলাকে যদি কক্সবাজারের কোন হাসপাতালে নিতে হয় তাহলে রাস্তার ঝাঁকুনিতে গাড়ীতেই সন্তান প্রসব হয়ে যেতে পারে। এবং লোকমুখে এমন অসংখ্য ঘঠনার কথা শোনাও গেছে। এডিবির অর্থায়নে নির্মিয়মান কক্সবাজার শহর সহ কক্সবাজার টেকনাফ সড়কের কাজ দীর্ঘ প্রায় ১ বছরেও শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারী কোম্পানী। এই সড়কের কাজ দেখলে পাগল ও মুচকি মুচকি হাসে। এতো ধীর গতি আর নিন্মমানের কাজ এক কথায় চোখে পড়ার মতো। কক্সবাজার শহরের বাসটার্মিনাল থেকে শুরু করে বাহারছড়া পর্যন্ত অপরিকল্পিত নগরায়ন অনেকটা পুরো শহরের সৌন্দর্য্যকেই নষ্ট করছে বলেই মনে হয়। এই এলাকাগুলোতে যত্রতত্র গড়ে উঠেছে অট্যালিকা কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পৌরসভার ভবন নির্মান বিধিমালা মানা হয়নি,যে কারনে পুরো পৌরবাসীকে সমস্যার জালে আবর্তিত করে রেখেছে। পাবলিকের কি দোষ দিবো, পৌরসভার ড্রেনেজ ব্যবস্থার বেহাল অবস্থা আরো মারাত্মক। শহরের বাজার ঘাটায় কোন বিদেশী পর্যটক আসা মানেই নিজের দেশের নাক কাটা যাওয়ার মতো।
পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকতের অবস্থা আরো নাজুক। করোনার থাবায় দীর্ঘদিন অসহায়ত্ব বরন করার পর যখন পর্যটন খাত আবার একটু ঘুরে দাড়াতে শুরু করেছে
ঠিক তখনই অতিবৃষ্টিতে কক্সবাজারের লাবনী পয়েন্ট, সুগন্দ্বা পয়েন্ট, বিমানবন্দর এলাকা, ডায়বেটিক পয়েন্ট, ডলফিন পয়েন্ট, হিমছড়ি সহ বেশ কিছু দৃষ্টিনন্দন এলাকায় সাগরের শক্ত ডেউয়ের কারনে ভাঙ্গনের শুরু হয়েছে যে কারনে ঐসব এলাকায় এখন পর্যটক যেতে সাহস হারাচ্ছে। আর হিমছড়ি সহ মেরিন ড্রাইভ সড়কটি সেনাবাহিনীর তত্বাবধানে থাকায় তারা অনেক কষ্টে এ সড়কটি টিকিয়ে রেখেছে। একদিকে উন্নয়ন অন্যদিকে খানাখন্দক সৃষ্টি , একদিকে অপরিকল্পিত নগরায়ন, অন্যদিকে ভাঙ্গন, তার উপর প্রায় ১৪ লক্ষ রোহিঙ্গার ভারে নুয়ে পড়া কক্সবাজার। এই জীর্ন দশা থেকে মুক্তি পেতে আর পুরো বিশ্বের সামনে নিজের সৌন্দর্য্যের বহিঃপ্রকাশ ঘঠাতে চাই কক্সবাজারকে নিয়ে মহাপরিকল্পনা। চাই যত্রতত্র প্রাসাদ নির্মান বন্দ্ব হোক, যাতে প্রকৃতি মানুষের মতো নিঃশ্বাস ফেলার সুযোগ পায় আপন স্নায়ুতে।

সীমান্তবাংলা/১৯সেপ্টেম্বর ২০২০