ঈদকে সামনে রেখে লাহারপুর হরিনগর রেশম পল্লী গুলোতে চলছে বিরামহীন কর্মযজ্ঞ

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৩, ২০২২
  1. পারভেজ মামুন চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি :

চাঁপাইনবাবগঞ্জের লাহারপুর, শিবগঞ্জের হরিনগর ও কানসাটের বিশ্বনাথপুরে রয়েছে অসংখ্য রেশম পল্লী। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে এবার কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে এসব রেশম তাঁত পল্লীগুলোতে। আর ঈদকে সামনে রেখে কর্মচাঞ্চল্য আরও বেড়েছে। সুযোগ-সুবিধা ও পৃষ্ঠপোষকতা বাড়ালে ব্যবসার মন্দাভাব কেটে যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঈদকে সামনে রেখে চাঁপাইনবাবগঞ্জের লাহারপুর, হরিনগর রেশম তাঁত পল্লীগুলো এখন তাঁতের খুটখাট শব্দ আর কারিগর-শ্রমিকদের ব্যস্ততায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। গত ২ বছর করোনার কারণে ৮মাস তাঁতের কাজ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। তেমন ব্যবসাও করতে পারেনি এখানকার তাঁত ব্যবসায়ীরা। এখন তাদের মন্দাভাব কেটেছে। তবে সারাবছর যতনা সরব থাকে, ঈদ এলে তা বেড়ে যায় কয়েকগুন। আর রেশম শাড়ির বুননে বৈচিত্র আর নতুনত্বের ছোঁয়া দিতে দিনরাত কাজ করছেন তাঁতিরা। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এখন চাহিদা অনেক বেশি, তাই নানা ধাপে এখানে রাত-দিন কাজে ব্যস্ত তাঁত শ্রমিকরা। তৈরি বাহারি সব রেশম সিল্কের পোশাক ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকার আড়ং, অভিজাত বিপনীবিতান, রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। এমনকি চাহিদা রয়েছে বিদেশেও।
এখানকার রেশম সিল্কের তৈরি শাড়ি, পাঞ্জাবির কাপড়, বেনারশী, গরদের কাপড়, মটকা, ওড়না, সালোয়ার কামিজ মূলত মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে উচ্চবিত্তদের পোশাকের চাহিদা মেটায়। আর ঈদকে সামনে রেখে বৈচিত্র আর নতুনত্বের ছোঁয়া দিতে দিনরাত কাজ করছেন এখানকার কারিগররা। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এখন চাহিদা বেশি। তাই রাতদিন কাজে ব্যস্ত কারিগর-শ্রমিকরা। দুই ঈদ আর পূজো ছাড়া বাকি সময় তাদের তেমন কাজ থাকে না। তবে, বাকি সময় তাদের তেমন কাজ না থাকায় কৃষি কাজ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোন রকমে দিনপাত করে থাকেন শ্রমিকরা।
রহমত আলী ও আলম নামে দুই শ্রমিক জানান, কাজের উপর মজুরি নির্ভর করে। সকাল ৮টা থেকে দুুপুর ১টা পর্যন্ত কাজ করা হয় এবং আবার বিকেল থেকে কাজ শুরু হয়। জিনিষপত্রের দাম বাড়লেও মজুরি তুলনামুলক বাড়েনি। যেসময় কাজ থাকে না সেসময় ধানের আবাদ আর কাটার কাজ করে বাকি সময় জীবিকানির্বাহ করতে হয়। তারা আরো বলেন, আনন্দ দাসের ১৬ টির মধ্যে করোনাকালিন সময়ে ৮টি তাঁত বন্ধ হয়ে গেছে। এভাবে অনেকেরই বন্ধ রয়েছে।
তাঁত মালিক কিরণ চন্দ্র দাস বলেন, বর্তমানে রং, সূতাসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য বাড়লেও কাপড়ের দাম সেভাবে বাড়েনি। এজন্য আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারা যাচ্ছে না। এ শিল্পের প্রতি সরকারের নজর বাড়ানো আরো প্রয়োজন। তাঁত মালিক ত্রিদেব দাস জানান, তাঁত বোর্ড থেকে ৫ ভাগ হারে সুদের বিপরীতে তাঁত প্রতি ৭০ হাজার টাকার ঋণ পাওয়া গেছে। করোনার কারণে গত দু’বছর ব্যবসার গতি মন্থর থাকার পর এবার ব্যবসার গতি কিছুটা বেড়েছে। এর ফলে কিছুটা ক্ষতির পরিমাণ পুষানো সম্ভব হবে।