‘ই-লার্নিং গুরুত্ব পাবে সংশোধিত শিক্ষানীতিতে’

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১২, ২০২০

সীমান্ত বাংলা ডেস্ক :  বর্তমান শিক্ষানীতিকে যুগোপযোগীকরণ এবং সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সেখানে ই-লার্নিংকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা.দীপু মনি।

শনিবার ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) আয়োজিত ‘ই-লার্নিং’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের ‘ইউনির্ভাসিটি অব সারে’-এর উপ-উপাচার্য প্রফেসর ওসামা খান।দীপু মনি বলেন, ‘আমাদের বর্তমান শিক্ষানীতি ২০১০ সালে প্রণয়ন করা হয়েছে, সেটাকে যুগোপযোগীকরণ এবং সংষ্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। শিক্ষানীতিতে ই-লার্নিংকে আরও বেশি গুরুত্ব দেয়া হবে।এদেশের মানুষ অত্যন্ত প্রযুক্তিবান্ধব, যার কারণে বিশেষকরে শিক্ষাকার্যক্রমে ই-লার্নিং-এর ব্যবহার বৃদ্ধিতে আমাদের জন্য খুব বেশি চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে না।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘কোভিড-১৯ মাহমারি একটি বৈশ্বিক সংকট, যেটি আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকেও এক ধরনের সংকটে ফেলেছে। প্রতিটি সংকটই সম্ভাবনার নতুন দিক উন্মোচন করে। করোনা মহামারি শিক্ষা ব্যবস্থায় ই-লার্নিং কার্যক্রম ব্যবহার বাড়ানোর জন্য নতুন একটি দিগন্ত উন্মোচিত করেছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের বর্তমান সময়ে ই-লার্নিং অত্যন্ত কার্যকর এবং সামনের দিনগুলোতে এটি আরও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হবে।’

তিনি বলেন, ‘সামনের দিনগুলোতে ক্লাসরুমে সরাসরি শিক্ষাদান কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি অনলাইনের মাধ্যমে ই-লার্নিং কার্যক্রম চালু রাখতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের নতুন নতুন বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়নে ই-লার্নিং কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’‘বাংলাদেশের মানুষ নানান প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে এ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে এবং কোভিড মহামারি মোকাবেলায় এদেশের মানুষ সাহসিকতার পরিচয় দেবে। সামনের দিনগুলোতে কী ধরনের দক্ষ লোকবল প্রয়োজন হবে, তার একটি প্রাক নির্বাচনের মাধ্যমে সে অনুযায়ী আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম, অবকাঠামো এবং শিক্ষকবৃন্দের দক্ষতা উন্নয়ন করতে হবে।’ অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা আরো সম্প্রসারণে মানসিকতা একটি বড় বাধা বলে জানান তিনি।

এছাড়াও মেধাবীদের শিক্ষাক্রমে নিয়ে আসার জন্য এ পেশাটিকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলতে হবে এবং শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরও দক্ষ করে তোলতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আরও বেশি হারে গবেষণা পরিচালনার উপর জোর দেন তিনি।কারিগরি শিক্ষার উপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দেশের ১৭% শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় রয়েছে। পরীক্ষা এবং সনদ সর্বস্ব শিক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত মানুষ গড়ে তোলা সম্ভব নয়। শিল্পখাত ও শিক্ষাব্যবস্থার মধ্যে সমন্বয় আরো বাড়ানো প্রয়োজন বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।’

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, মোবাইল ডেটা প্যাকেজের উচ্চ মূল্য প্রান্তিক জনগণের ইন্টারনেট সংযোগ প্রাপ্তিতে বড় বাধা।অবকাঠামো ও ইন্টারনেট সংযোগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে পিছিয়ে রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো’র তথ্য উল্লেখ করে ডিসিসিআইর সভাপতি শামস মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের মাত্র ৩৭.৬ শতাংশ হাউজহোল্ড এর ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে এবং ৫.৬ শতাংশ হাউজহোল্ডে এ কম্পিউটার রয়েছে। এছাড়াও মোবাইল ডেটা প্যাকেজের উচ্চ মূল্য প্রান্তিক জনগণের ইন্টারনেট সংযোগ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা।

ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, শিল্পখাতের চাহিদা অনুযায়ী তরুণ জনগোষ্ঠীকে প্রস্তুত করতে কারিগরি শিক্ষায় আরও বেশি হারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি জানান, অর্গানাইজেশন ফর ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ভুক্ত দেশগুলোতে কারিগরি শিক্ষায় গড় অংশগ্রহণের হার ৪৫ শতাংশের উপরে, সেখানে বাংলাদেশে ১৫ শতাংশেরও কম। এমঅবস্থায় কারিগরি শিক্ষায় অংশগ্রহণ এবং আগ্রহ বৃদ্ধি করতে একে সহজলভ্য করা প্রয়োজন বলে মনে করেন ডিসিসিআই সভাপতি এবং এ ক্ষেত্রে ই-লার্নিং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

ওয়েবিনারে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-উর রশিদ, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ-এর উপাচার্য প্রফেসর ড. কারম্যান জেড লামাংনা, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড-এর চেয়ারম্যান ড. মো. মুরাদ হোসেন মোল্লা, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনির্ভাসিটি’র ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. খাজা ইফতেখার উদ্দিন আহমদ, নর্থ-সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইশতিয়াক আজিম প্রমুখ আলোচক হিসেবে যোগদান করেন।ওয়েবিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুক্তরাজ্যের ‘ইউনির্ভাসিটি অব সারে’-এর উপ-উপাচার্য প্রফেসর ওসামা খান।

ঢাকাটাইমস/১২সেপ্টেম্বর/এড‌মিন ইব‌নে যা‌য়েদ