আওয়ামী নামধারী সিন্ডিকেটের অপরাজনীতি রুখতে আমরা সোচ্চার ও অঙ্গীকারবদ্ধ

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: মে ২, ২০২২

 

প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদ 

দৈনিক কক্সবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত “ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করাই মূল লক্ষ্য “শিরোনামে সংবাদটি কক্সবাজার জেলা আওয়ামিলীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। উক্ত সংবাদে প্রতিবেদক কক্সবাজার পৌর আওয়ামীলীগ, সদর উপজেলা আওয়ামিলীগ, রামু উপজেলা আওয়ামিলীগ নেতাদের উদ্ধৃতি হয়ে আপত্তিকর মন্তব্য প্রকাশ করেছেন তাহা দেখে এবং পড়ে মনে হচ্ছে জেলা আওয়ামীলীগের কতিপয় নেতারা দীর্ঘ সময় ধরে একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয় এমন যে সমস্ত কাজ করেছেন তাহা ঢেকে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে বলে মনে হয়। আমরা যারা জেলা আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃত্বে থেকে তৃণমূলে গ্রাম থেকে ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে দলকে সুসংগঠিত করে দেশরত্ন শেখ হাসিনার নীতি ও আদর্শের প্রতি অবিচল থেকে দল এবং দলের উন্নয়ন করতে কাজ করে যাচ্ছি। জেলা আওয়ামীলীগের কতিপয় দুর্নীতিবাজ নেতারা আমাদের সহযোগী সংগঠনকে সহযোগিতা করাতো দূরের কথা উল্টো খেয়ে না খেয়ে যারা রাজনীতিকে মাঠ পর্যায়ে ধরে রেখেছেন তাদের কথায় কথায় হেনস্তা করেছে এবং করে যাচ্ছে। সহযোগী সংগঠনের স্বাভাবিক রাজনৈতিক কর্মকান্ডে লাঠিয়াল বাহিনী কতৃক বাধা গ্রস্ত করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করার প্রমাণও রয়েছে। যাহা আমাদের দলীয় প্রধান মাননীয় সভানেত্রী বরাবর দাখিল করার জন্য সংরক্ষণ করে রেখেছি। শুধু তাই নয় বঙ্গবন্ধু ও দেশরত্ন শেখ হাসিনার আদর্শ লালনকারী যে সমস্ত নেতারা জেলা আওয়ামীলীগের দুর্নীতিগ্রস্ত নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই হয় তাদের উপর সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে হামলা করিয়েছে অথবা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার করে মামলা করে জেলে পাঠিয়েছেন সেই রকম প্রমাণও রয়েছে। এমনকি জেলা আওয়ামীলীগের এই সিন্ডিকেটের অবৈধ দখলবাজ দের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা বর্তমানে যুবলীগ নেতা মুনাফ সিকদারকে প্রাণে মেরে ফেলতে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে গুলি পর্যন্ত করেছে যাহা কক্সবাজারের সকল স্তরের সাধারণ মানুষেরা অবগত রয়েছেন। এই চক্রের দুর্নীতি, অবৈধভাবে সাধারণ মানুষের জমি দখল বাড়ি দখল, মাদক কারবারিদের আশ্রয় প্রশ্রয় দান, দেশরত্ন শেখ হাসিনা কক্সবাজার জেলায় যে বড় বড় মেগা প্রকল্প সমুহের ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ভূমি মালিকদের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যে অর্থ প্রদান করার নির্দেশ দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের জিম্মি করে সেই অর্থ লুটপাট করা সহ নানা অভিযোগ রয়েছে জেলা আওয়ামীলীগের প্রথম সারীর নেতাদের নিয়ন্ত্রিত কতিথ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে। এমন কি সরকারের কতিপয় দুর্নীতিবাজ আমলাদের যোগসাজশে ৩ কোটি টাকা মূল্যের জমি ৩৩ কোটি টাকা মূল্য দেখিয়ে আত্মসাৎ করারও নজির রয়েছে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে যাহা বর্তমানে দুদক কতৃক তদন্তাধীন রয়েছে।

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে এমন কোন প্রকল্প নেই যেখানে দুর্নীতির সাথে জেলা আওয়ামীলীগের এই সিন্ডিকেট জড়িত নেই। ২০০৮ সালের আগে যাদের জীবন যাপন করতে সংকটাপন্ন অবস্থা ছিল সেই নেতারা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক হয়ে গেছে। এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলা মানে কি জেলা আওয়ামীলীগের নেতাদের কে প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করানো বুঝায়?

শুধু তাই নয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নে লাখ লাখ টাকা আদায় করে দলীয় মনোনয়ন বাণিজ্য চালিয়েছেন জেলা আওয়ামীলীগের কথিত এই সিন্ডিকেট। কক্সবাজারের প্রাণ বাঁকখালী নদীতে সৃজিত বন কেটে জমি দখল, হোটেল মোটেল জোনে অসংখ্য প্লট ও হোটেল অবৈধ ভাবে দখল করার বিরুদ্ধে কথা বলা কি জেলা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে সহযোগী সংগঠনকে দাঁড় করানো?
হোটেল মোটেল জোনে তালিকাভুক্ত ইয়াবা কারবারি মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে আত্মসমর্পণকারী আত্মসীকৃত ইয়াবা কারবারি শাহজাহান আনসারীকে দিয়ে হোটেল জামান সী হাইটস দখল করিয়ে এখনো পর্যন্ত দখল বজায় রাখার শক্তি যুগিয়েছে জেলা আওয়ামীলীগের কথিত সিন্ডিকেট। সদর উপজেলার ভারুয়াখালীর আওয়ামিলীগ পরিবারের সন্তান সৌদি আরব প্রবাসী হাবিব উল্লাহর প্রবাস জীবনের আয়ের সমুদয় টাকা দিয়ে কক্সবাজার পৌরসভাস্থ পাহাড় তলীতে একটি খাস জায়গা ক্রয় করে একটি বাড়ী নির্মাণ করেন। সেই বাড়িটি প্রবাসী হাবিব উল্লাহর স্ত্রীকে প্রলোভন দেখিয়ে হাবিব উল্লাহর অনুপস্থিতিতে পাহাড় তলীর বিএনপি সমর্থিত ঠিকাদার কানা কবিরকে ক্রেতা সাজিয়ে আত্মসাৎ করার ব্যবস্থা করেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে গড়ে উঠা সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা কথা বলা মানে কি “ব্যক্তিস্বার্থ রক্ষা করা? উপর্যুক্ত শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে স্থানীয় সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমলকে আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনকে জেলা আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতাদের প্রতিপক্ষ হিসাবে দাঁড় করানোর ইন্ধন দাতা বলে উল্লেখ করেছেন। আমরা অত্যান্ত বিনয়ের সাথে জানাচ্ছি যে স্থানীয় সাংসদ যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামিলীগের সাংসদ হিসাবে দায়িত্বে থাকবেন ততক্ষণ পর্যন্ত সহযোগী সংগঠনের নেতা কর্মীরা স্থানীয় সাংসদকে সম্মান করে যাবে এটাই হল দেশরত্ন শেখ হাসিনার নির্দেশনা। তার মানে এই নয় যে কোন সহযোগী সংগঠন স্থানীয় সাংসদের ক্রীড়নকের ভূমিকা পালন করবে।

আমরা জেলার সহযোগী সংগঠনের নেতা হিসাবে হাইব্রিড সুবিধা ভোগীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছি। যেমন জাতীয় শ্রমিক লীগের মূল কমিটিকে বাদ দিয়ে যুবদলের নেতা সোহেল রানাকে জাতীয় শ্রমিকলীগের আহ্বায়ক করে একটি আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দিতে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক সুপারিশ করেছিলেন। যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছিল সেই যুবদল নেতা সাজাপ্রাপ্ত দুর্নীতির বরপুত্র তারেক জিয়ার সাজা বাতিল ও মুক্তি দাবী করে মানববন্ধন প্রতিবাদ সভা করে জেলা প্রশাসককে স্মারকলিপি প্রদান অনুষ্ঠানের প্রথম সারীর যুবদল নেতা ছিলেন। সেই সমস্ত হাইব্রীট নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলা কি, আমরা সহযোগী সংগঠনের নেতাদের ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করা?

জেলা আওয়ামীলীগের নানা অপকর্মের বিরুদ্ধে জাতীয় শ্রমিকলীগ জেলার নেতৃবৃন্দ বিরোধিতা করার কারণে জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের ইন্ধনে জাতীয় শ্রমিকলীগ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি জহিরুল ইসলাম সিকদারকে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দিয়ে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করেছে বলে এমন জনশ্রুতি রয়েছে। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে এর সত্যতা নিশ্চিত করা যাবে।

কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের কতিপয় দুর্নীতিবাজ নেতাদের কারণে আজ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হাজারো অর্জন মলিন হয়ে যাচ্ছে। এই স্বার্থান্বেষী দুর্নীতিবাজ নেতাদের বিরুদ্ধে কথা বলা যদি জেলা আওয়ামীলীগের বিরুদ্ধে কথা বলা হয় তাহলে আমাদের প্রশ্ন হল আমাদের আস্থা ও বিশ্বাসের শেষ ঠিকানা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের সভানেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা যে মাদক ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন তার স্বার্থকতা কোথায়?
গত ২৭ এপ্রিল জেলার সহযোগী সংগঠনের ইফতার মাহফিল করার পর থেকে এই দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেট আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। কারণ তাদের কৃত দুর্নীতির বিভিন্ন তথ্য বেরিয়ে আসার সমূহ আশঙ্কা দেখা দেওয়ায় এখন তারা শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো অপচেষ্টার অংশ হিসাবে এই বিবৃতি প্রদান করেছে বলে আমরা মনে করি।

সুতরাং কক্সবাজার জেলা আওয়ামীলীগের আদর্শবান নেতা ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা জেলা আওয়ামীলীগের বর্তমান দুর্নীতিবাজ নেতাদের বোতল সিন্ডিকেটের দেওয়া কোন প্রকার বক্তব্য বিবৃতিতে বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।

বিবৃতি দাতাঃ

জেলার সকল সহযোগী সংগঠনের সভাপতি সাধারণ সম্পাদক।