অর্ধলাখ পর্যটক আটকে পড়ল কক্সবাজার

SIMANTO SIMANTO

BANGLA

প্রকাশিত: নভেম্বর ৫, ২০২১

ছৈয়দ আলম, কক্সবাজার:

ডিজেল ও কেরোসিনের দাম বাড়ানোর প্রতিবাদে ডাকা গণপরিবহন ধর্মঘটের কারণে কক্সবাজারে এসে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার পর্যটক। আগাম ঘোষণা ছাড়া হঠাৎ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আটকা পড়েছেন তারা। কেউ কেউ তড়িঘরি করে কক্সবাজার ছাড়লেও বেশির ভাগ পর্যটক আটকে আছেন।

 

কক্সবাজারের বাস পরিবহনসেবার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, শুক্রবার থেকে বাস ধর্মঘট হবে এমন খবর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তারা জানতে পারেন। এতে অনেক পর্যটক রাতেই ফিরে যান। বৃহস্পতিবার হওয়া সত্ত্বেও রাতের বাসগুলোতে অনেক ভিড় ছিল। তবে শুক্রবার থেকে বাস পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। মালিকপক্ষের নির্দেশনার কারণ একটি বাসও ছেড়ে যায়নি। যারা টিকেট কেটেছিলেন তাদের ফোনে বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কেউ কেউ টাকা ফেরতও নিয়েছেন। আবার কেউ রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করছেন।

 

ঢাকা থেকে আসা পর্যটক নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গত দুই দিন আগে কক্সবাজারে বেড়াতে এসেছি। ধর্মঘটের কারণে ঢাকায় যেতে পারছি না। গতকাল ঝাউতলা গ্রিন লাইন কাউন্টার থেকে অগ্রিম টিকেট বুকিং করেছিলাম। এখন কাউন্টার থেকে বলছে, রাতে গাড়ি না ছাড়লে টাকা ফেরত দেবে। কিন্তু থাকবো কোথায়, রুমও ছেড়ে দিয়েছি।’

 

আরেক পর্যটক জামাল হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার বিকাল ৫টায় আমার টিকেট ছিল। কিন্তু এখন বাস যাচ্ছে না। আসলে খুব দুর্ভোগে পড়লাম।’

 

ইউনিক পরিবহনের কক্সবাজারের ইনচার্জ আবদুর রহিম গণমাধ্যমকে জানান, দিনের বেলা তাদের কোনো বাস নাই। রাতেই সব বাস চলাচল করে। অনেকের টিকেট বুকিং ছিল, যারা যেতে পারছে না তাদের ফেরত দেওয়া হচ্ছে। আর যারা টিকেট ফেরত নেবেন না তারা গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হলে যেতে পারবেন।

 

গ্রিন লাইন পরিবহন কক্সবাজারের ইনচার্জ সোলতান আহমদ গণমাধ্যমকে বলেন, আমাদের যাদের টিকেট বুকিং আছে, শুক্রবার রাতে গাড়ি ছেড়ে না গেলে টাকা ফেরত দেব। ধর্মঘট চলমান থাকলে রাতে বাস না চলার সম্ভাবনার কথা যাত্রীদের বলে দিচ্ছি ফোনে।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিবহন নেতা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধি করলে আমরা কীভাবে পরিবহন মাঠে নামাবো। কেন্দ্রের নির্দেশে সমস্ত গাড়ি কক্সবাজারে আমরা বন্ধ রেখেছি। যখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক বা উপরের নির্দেশনা আসবে তখন বাসচলাচল আবার শুরু হবে।’

 

কক্সবাজার হোটেল-মোটেল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ কলিম গণমাধ্যমকে বলেন, বাস বন্ধের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনায় পর্যটকেরা আটকে পড়েছেন। আবার অনেকই বুকিং দিয়ে আসতেও পারছেন না। এতে আমাদের ব্যবসার ক্ষতি হবে আবারো। এটা সারাদেশে সমস্যা। দ্রুত বসে সমাধান করা উচিত।

 

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট (পর্যটন সেল) সৈয়দ মুরাদ ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, পরিবহন ধর্মঘটের পর পর্যটকরা যাতে হয়রানির শিকার না হয় খবরাখবর রাখা হচ্ছে। বাস কাউন্টার থেকে যাতে টিকেটের টাকা ফেরত দেওয়া হয় এবং হোটেলে যেন সমস্যা না হয় সে ব্যাপারে তারা তদারকি করছেন।

 

গত বুধবার রাতে জ্বালানি তেলের দাম ৬৫ থেকে ১৫ টাকা বাড়িয়ে ৮০ টাকা নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সরকার। এর প্রতিবাদে এবং ভাড়া বাড়ানোর দাবিতে শুক্রবার থেকে যাত্রী ও পণ্যবাহী যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে মালিকপক্ষ। এতে সারাদেশে চরম ভোগান্তিতে পড়েছে যাত্রী সাধারণ।

সূত্রঃ ঢাকা টাইমস

সীমান্তবাংলা/রম/০৫ নভেম্বর ২০২১