প্রতিনিধি ২ জানুয়ারি ২০২০ , ৩:১৭:৪৬ প্রিন্ট সংস্করণ
টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের ঐতিহ্য ১০ টাকার নোটে মুদ্রিত প্রাচীন নিদর্শন আতিয়া মসজিদটি দ্রুত সংস্কার করা প্রয়োজন। টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে সুলতানি ও মুঘল স্থাপত্যরীতির কারুকার্য শোভিত দৃষ্টিনন্দন প্রায় চারশ বছরের প্রাচীন আতিয়া জামে মসজিদ দেখতে প্রতিদিনই দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন অনেক পর্যটক।
এলাকাবাসীর কাছ থেকে জানা যায়, আলি শাহান শাহ্ বাবা আদম কাশ্মিরী (র)কে সুলতান আলাউদ্দিন হুসাইন শাহ টাঙ্গাইল জেলার দায়িত্ব পর পর থেকেই এই অঞ্চলে এসে বসবাস করেন। সে সময় তিনি ইসলাম ধর্ম প্রচারের ব্যয় নির্বাহের জন্য আফগান শাসক সোলাইমান কররানীর কাছ থেকে এই এলাকা দান হিসেবে লাভ করেন।
দান করায় এই অঞ্চলটির নাম হয় ‘আতিয়া’। আরবি ‘আতা’ থেকে ‘আতিয়া শব্দটির উৎপত্তি, যার বুৎপত্তিগত অর্থ হল ‘দানকৃত’ এই এলাকার নামেই ১৬০৮ সালে করটিয়া জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠা সাঈদ খান পন্নী বাবা আদম কাশ্মিরীর কবরের পাশে প্রাচীন এই মসজিদটি নির্মাণ করেন। মুহাম্মদ খাঁ নামক তৎকালীন প্রখ্যাত স্থপতির নির্দেশনায় চুন, সুরকির সুনিপুণ কারুকার্যে মসজিদটির নির্মাণের পরিকল্পনা ও নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়। লাল ইট দ্বারা নির্মিত এই মসজিদটি আকারে বেশ ছোট, মসজিদটির দৈর্ঘ্য ৪২ ফুট প্রস্থ ৩২ ফুট এবং উচ্চতা ৪৪ ফুট। মসজিদটির একটি বড় আকৃতির গম্বুজসহ মোট চারটি গম্বুজ রয়েছে। মসজিদের দেয়াল আট থেকে সারে আট ফুট প্রশস্ত। মসজিদটি নির্মাণের পর পুনরায় ১৮৩৭ সালে রওশন খাতুন চৌধুরাণী সংস্কার করেন এবং আবুল আহমেদ খান গজনবী ও করটিয়ার জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নীসহ কয়েকজন মিলে ১৯০৯ সালে মসজিদটি আবার সংস্কার করেন। পরবর্তীতে সরকার মসজিদটিকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে অধিগ্রহণ করে। অধিগ্রহণ করলেও সরকারিভাবে মসজিদের কোনো সংস্কার না হওয়াতে নষ্ট হচ্ছে মসজিদের দেওয়ালের নকশা এবং মাটির টেরাকোটাগুলো।
এলাকাবাসী ও ঘুরতে আসা পর্যটকগণ দৈনিক সকালের সময় পত্রিকাকে দেয়া সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে দৃষ্টিনন্দন প্রাচীন এই মসজিদটি সংস্কারের দাবি জানায়। সেই সাথে বাংলাদেশ সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর এর নিকট দাবী জানান, যেন পূর্বের ন্যায় আতিয়া মসজিদের ছবি সম্বলিত ১০ টাকার নোট আবার বাজারে চালু করা হয।