শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ অপরাহ্ন

শিরোনামঃ
প্রতিষ্টাতা কমিটির উদ্যোগে রামু প্রেস ক্লাবের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত  নরসিংদীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য জনতা জুটমিল বন্ধ ঘোষণা নরসিংদীতে কারাগার থেকে লুট হওয়া শটগান ও চায়নিজ রাইফেলের ম্যাগজিন উদ্ধার উখিয়ায় কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন উখিয়ায় অরক্ষিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির হিড়িক, আইনের কোন বালাই নাই সিলেটে বিমান থেকে উখিয়ার সালাউদ্দিন র‍্যাবের হাতে আটক।  বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গতিধারা নতুন করে বিনির্মাণ করতে হবে ” মুহাম্মদ শাহজাহান ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া কমপ্লেক্সে হামলার প্রতিবাদে সিরাজগঞ্জে সমাবেশ। কর্মজীবনের ইতি টানলেন প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম নরসিংদীতে চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
হায়েনাদের থাবায়, স্বাধীন রাষ্ট্রের অবশিষ্ট অন্তঃবাস যখন খোলা হয়!

হায়েনাদের থাবায়, স্বাধীন রাষ্ট্রের অবশিষ্ট অন্তঃবাস যখন খোলা হয়!

স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ রাষ্ট্রের বয়স এখন ৫০ ছুঁই ছুঁই! পারিবারিক শিক্ষা, সামাজিক অধঃপতন, কু-সংস্কৃতি, কু-শিক্ষা আর রাষ্ট্রীয় আইনের উদাসীনতা মানুষকে দিন দিন অসভ্য, বর্বর পশুতে পরিনত করে চলছে। সেই তথাকথিত পশুর দল দিনকে দিন লাগামহীন, অপ্রতিরোধ্য, দুর্ধর্ষ হয়ে উঠছে। কিন্তু এ অবস্থার সৃষ্টি কেন হয়েছে, আমাদের প্রত্যেককেই চুলচেরা বিশ্লেষনে বসা দরকার। কিন্তু এখনও আমরা আইনের শাসন, ধর্মীয় অনুশাসন, নীতি-নৈতিকতা, সুস্থ সংস্কৃতির লালন ও আদর্শ সমাজ বিনির্মাণের মধ্যে আবর্তিত হতে পারছিনা। নিশ্চয়ই আমাদেরকে তথাকথিত ব্যক্তি, গোষ্টি, দলীয় দৃষ্টি ভঙ্গীর উর্ধ্বে উঠে নিয়মতান্ত্রিকতার মাধ্যমেই দেশের আইনের শাসন, নীতি-নৈতিকতা, নিজ নিজ ধর্মীয় অনুশাসন চর্চা ও লালন করতে হবে। যারা অপরাধ করে তারা স্বভাবতঃই অপরাধী। অপরাধীদের নিজস্ব কোন দল নেই, ধর্ম নেই, নেই কোন নীতি, নৈতিকতা ও আদর্শ। তারা রাজনীতিকে ব্যবহার করে ব্যক্তি ও গোষ্টি স্বার্থ হাসিল করে মাত্র! সমাজ ও রাষ্ট্রে তারা বিভিন্ন লেবাস ধরে হীন স্বার্থ সিদ্ধি করে! এ-ই সমাজের ক্ষয়, অধঃপতন একদিনে হয়নি কিন্তু! এজন্য আমরা সবাই কম বেশি দায়ী!

দেশে আইন নেই, বাস্তবিক আইনের শাসন নেই। আবার আইন থাকলেও আইনের বাস্তবিক প্রয়োগ নেই! বর্তমান সময়ে আইনের শাসন প্রতিষ্টা ভীষন জরুরি হয়ে পড়েছে। আমাদের সুপরিকল্পিতভাবে অর্থনৈতিক পরিকাঠামো তৈরি করে বেশি বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বেকারত্বের গ্লানী থেকে যুবসমাজকে মুক্তি দিয়ে দেশ গঠন্মূলক কর্মকান্ডে আত্মনিয়োগ করিয়ে ভবিষ্যৎ বিনির্মাণের পথ প্রশস্ত করতে। চারিদিকে কেবলই হতাশা ও অন্ধকারের চোরাগলি। অন্ধকার থেকেই আলোর বিচ্ছুরণে যুবসমাজকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে হবে, যেখানে কালো তিমিরকে জয় করে আলোকচ্ছটা ফুটে ওঠবে তাদের অন্তঃকরণে। এভাবেই সমাজ ব্যবস্থায়ও আলো আসবে, আসতেই হবে।তবে কিভাবে, কার হাত ধরে সেই আলো আসবে, কে হবে সেই অমানিশার দিশার কান্ডারী-সেটা সময়ই ঠিক বলে দেবে একদিন!

বাংলাদেশের আইনের শাসন বলেন, সুশাসন বলেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্রের সংবিধানকে সমুন্নত রাখা বলেন, কোন কাজটা আজ বিধিসম্মত, রাষ্ট্রীয় আইনে প্রতিফলিত হচ্ছে? ধর্ষণ, খুন, সন্ত্রাস, অত্যাচার, নিপীড়ন, দূর্নীতি, দুঃশাসন, মানবতার অন্তিম সয্যা আজ দৃশ্যমান! সারা দেশ আজ দানব হায়েনা ও শকূনের খপ্পরে নিপতিত হয়ে দূর্নীতি ও ধর্ষণপুরীতে পরিনত হয়েছে আমার প্রিয় স্বদেশ।

অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে যেমন আমরা ভুলে গেছি, ঠিক তেমনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলাও ভুলতে বসেছি! আমরা নাকি বীরের জাতি! যে বীররা স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্টার জন্য এত এত ত্যাগ, তিতিক্ষা, এত সগ্রাম করতে জেনেছে, ত্রিশ লক্ষ মানুষের তরতাজা প্রাণের আত্মাহুতি, তিনলক্ষ মা-বোনের ইজ্জ্বতের বিনিময়ে অর্জিত দেশ আজ তথাকথিত ধর্ষক, সন্ত্রাস, দূর্নীতিবাজ, একশ্রেণির সুবিধাবাদীদের খপ্পরে পড়ে শেষ হতে থাকবে, আর দেশের সচেতন নাগরিক সমাজ, আমজনতা দেখে দেখেই যাবে, এ-র প্রতিবাদ, প্রতিরোধে মুখর হয়ে উঠবেনা-এটি ভাবতেই নিজের শরীর, মনে কেমন যেন দ্রোহ সৃষ্টি হয়।

আমি মনে করি, সেদিনের ঘটনায়, আমার সেই বোন, ঐ মা উলংগ হননি, ঠিক হায়েনার দল উলংগ করেছে আমার দেশের আইন-আদালত, উলংগ করেছে আইনের শাসন, উলংগ করেছে মানবতা, জবাবদিহীতাকে এবং উলংগ করেছে স্বাধীন রাষ্ট্রের বর্তমান ও ভবিষ্যতকে!! এ কেমন দেশে আমরা বাস করছি? যেখানে আইন আছে, আইনের শাসনের সঠিক প্রয়োগ নেই, যেখানে সরকার আছে, সরকারের কোন জবাবদিহিতা নেই, যেখানে হাজার হাজার কোটি টাকা এক কলমের খোচায় নেই হয়ে যায়, যেখানে অপরাধীরা অপরাধ করে পার পেয়ে যায়, যেখানে দিনে দুপুরে মা-বোনের ইজ্জ্বত লুন্ঠন হয় কিছু তথাকথিত সোনার ছেলেদের দ্বারা, যেখানে মায়ের সামনে মেয়েকে, স্বামীর সামনে স্ত্রীকে, ভাইয়ের সামনে বোনকে, মা-বাবার সামনে মেয়েকে দলবেধে গণধর্ষন করে বিজয় উল্লাসে মিছিল করে উদযাপন করে!

আমাদের অগ্রজরা জীবনবাজি রেখে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এনেছিল কি তাদের উত্তরসুরীদের এমন ন্যক্কারজনক পরিবেশ পরিস্থিতি অবলোকন করার জন্য? তবে বিবেকের প্রশ্ন জাগে, কেন এ-ই স্বাধীনতা, কেন এ-ই গনতন্ত্র? স্বাধীনতা উত্তর আজ অবধি এমন বর্বরোচিত লোমহর্ষক ঘটনা আর পরিলক্ষিত হয়েছে বলে আমার জানা নেই। আজকের ঘটনার ধিক্কার জানাবার ভাষা আমার জানা নেই, জাতির বিবেক আজ বাকরুদ্ধ! এহেন বর্বরোচিত ঘটনায় সতের কোটি মানুষের মাথা হেট হয়ে যায়, একটি সভ্য (?) স্বাধীন দেশে এমন ঘটনা কিভাবে ঘটাতে পারে? জাতির অসহায়ত্ব, দ্বায়বদ্ধতার অভাব আর বিচারহীনতার সংস্কৃতির বেড়াজালে আজ আমরা বোবা শয়তান হয়ে পড়ছি নাতো? আমরা যেমন কিছু করতে পারছিনা, ঠিক তেমনি কিছুই বলতে পারছিনা। সমাজের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে ওঁত পেতে আছে সেসব বন্য হায়েনার দল। তারা কাদের আস্কারায় পুরো দেশটাকেই বিবস্ত্র করে তুলছে, আজ জাতি জানতে চায়।

সমাজে যেখানে অন্যায়ের প্রতিবাদ করাটাই গর্হীত ‘অন্যায়’ বলে প্রতিভাত হয়ে উঠে, সেখানে বর্তমান আইনি ব্যবস্থার কাছে বিচার চাওয়া, উলোবনে মুক্তো ছড়ানো একই কথা বলে অনেকেই মনে করছেন। হয়তো আমাদের মতো বোবা শয়তানদের আজ নির্লজ্জ আত্মাহুতি দেয়া উচিত অথবা ধর্ষক, খুনী, দূর্নীতিবাজ নামক হায়েনা গুলাকে প্রকাশ্যেই দিবালোকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করা, বা বিশেষ অংগ কেটে নেওয়া এখন সময়ের সাহসী দাবি।

লেখকঃ  আয়াজ রবি

তারিখঃ ৫ অক্টোবর ২০২০

( মতামত জন্য সম্পাদক দায়ী নয়)

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© কপিরাইট ২০১০ - ২০২৪ সীমান্ত বাংলা >> এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ

Design & Developed by Ecare Solutions