মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
অভিনব কৌশলে পলাতক আসামি ধরার ধারাবাহিক সাফল্য, আলোচনায় মহেশখালীর এসআই মনির অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী দেখামাত্র গুলি করে হত্যার নির্দেশ সিএমপি কমিশনারের উখিয়ায় অগ্নিকাণ্ডে ৫০ টি দোকান পুড়ে ছাই, নি’হ’ত- ১ ৩ হাজার পিস ইয়াবা সহ নারী আটক আন্দোলনরত শিক্ষকদের উপর হামলার প্রতিবাদে উখিয়ায় মানববন্ধন ঘুমধুম সীমান্তের চোরাকারবারি খোকনের নেতৃত্বে পাহাড় কাটার ধুম বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য জাপান আরও দক্ষতা পরীক্ষা কেন্দ্র স্থাপনের কথা বিবেচনা করছে নির্বাচন বানচালের নানামুখী ষড়যন্ত্র চলছে : মির্জা ফখরুল ২০২৬ সালের সরকারি ছুটির তালিকা অনুমোদন ঢাকায় এক মঞ্চে ইতিহাস গড়তে আসছেন দুই রক লেজেন্ড

স্বামীর চিকিৎসার জন্য সন্তানকে দত্তক দিলেন মা

সীমান্তবাংলা ডেস্ক: / ২৯ জন পড়েছে
প্রকাশ: মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ০৭:২৩ অপরাহ্ন

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় চিকিৎসার ব্যয়ভার মিটাতে না পেরে নিজের শিশু কন্যাকে ৩৫ হাজার টাকায় দত্তক দিয়েছেন মা শাহিমা বেগম। কন্যা শিশুটির নাম খাদিজাতুল কোবরা (৩ দিন)।

উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নের দড়িকিশোরপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, দড়িকিশোরপুর গ্রামের খিজির উদ্দিনের ছেলে দুলাল মিয়া (৪৪) এর মুখের মাড়ি পচনে অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসার উন্নতি না হওয়ায় রংপুর কসির উদ্দিন বে-সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে অপারেশন সম্পন্ন করা হয়। প্রায় এক মাস চিকিৎসার পর তার অবস্থার একটু উন্নতি হয়। নিজের সহায় সম্বল যা ছিল সব শেষ হয়েছে চিকিৎসার ব্যয়ে। উপায়ান্তর না দেখে নিজের তিনদিনের শিশু সন্তানকে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে ৩৫ হাজার টাকায় দত্তক দিয়েছেন।

এলাকাবাসীর সহায়তায় স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরের মাধ্যমে উপজেলার উলিপুর পৌরসভার বাকরের হাট নিজাই খামার এলাকায় এক নিঃসন্তান দম্পতির কাছে শিশুটিকে তুলে দেওয়া হয়।

শিশুটির বাবা দুলাল মিয়া চায়ের দোকানে কাজ করতেন। মা শাহিমা বেগম (৩২) অন্যের বাড়িতে ও জমিতে দিনমজুর হিসাবে কাজ করে আসছেন।

শিশুটির মা শাহিমা বেগম বলেন, ‘স্বামীর চিকিৎসাজনিত কারণে প্রায় লক্ষাধিক টাকা ঋণ করেছি। টাকার অভাবে স্বামীর চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছিলো না, ঋণও পরিশোধ করতে পারছি না। এদিকে স্বামীর অসুস্থতার কারণে আয়-রোজগারও বন্ধ হয়েছে। আমার ভিটেমাটি ছাড়া কিছুই নেই।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমার ৬ ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সদস্য আটজন। এর মধ্যে বড় মেয়ের তিন বছর আগে বিয়ে দিয়েছি। এছাড়া দোলেনা খাতুন (৮ম শ্রেণি), শাকিল মিয়া (৩য় শ্রেণি) ও রমজান আলী নূরানী মাদ্রাসায় পড়াশোনা করছে। এখন বাচ্চাদের পড়াশোনার খরচ চালাতে পারছি না। তাদের খাবার কিনতেও পারছি না। চিকিৎসার টাকার জন্য ছোট মেয়ে খাদিজাতুল কোবরাকে এক নিঃসন্তান পরিবারের কাছে দত্তক দিয়েছি। বিনিময়ে তারা স্বামীর চিকিৎসার জন্য ৩৫ হাজার টাকা দিয়েছে। তাই চিকিৎসাও একটু এগোতে পারছি।’

শাহিমা বেগম বলেন, ‘মেয়ের জন্য কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু কী করব, আমার স্বামীর চিকিৎসার দরকার। তিনি অসুস্থতার জন্য কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। তিনি সুস্থ থাকলে আমাদের খাওয়া-পরা চালাতে পারবেন। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েটাকে দত্তক দিয়েছি।’

এলাকাবাসী আলামীন ইসলাম (৩২), শাহাজামাল মিয়া (৩৩), মহুবর মিয়া (৫২), দুলু মিয়া (৪৫), নয়া (৫০), আফজাল হোসেন (৫০), জয়নাল আবেদিন (৫৬) ও গণি মিয়া (৬০) সহ অনেকে জানান, দুলাল মিয়ার চিকিৎসার জন্য এলাকাবাসী চাঁদা উঠিয়ে কিছু টাকা দিয়েছেন। আরও টাকার প্রয়োজন হলে তার ছোট মেয়েকে দত্তক হিসাবে দেন। তার বিনিময়ে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে চিকিৎসা চালান। এখন তার সংসার চলার মত কোনো আয় রোজগার নেই। দুর্বিষহ জীবন যাপন করছেন বলে জানান তারা।

থেতরাই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সিদ্দিকুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘দিন মজুর দুলাল মিয়া অসুস্থ হলে তার অপারেশনের জন্য অনেক টাকার দরকার ছিল। কিছু টাকা এলাকাবাসী চাঁদা করে উঠিয়ে দিয়েছে। সে টাকা পর্যাপ্ত না হওয়ায় তার ছোট মেয়েকে দত্তক হিসাবে দিয়ে তার বিনিময়ে কিছু টাকা দেন। সে টাকা দিয়ে চিকিৎসা চালান।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতাউর রহমান জানান, বিষয়টি আমাকে কেউ অবগত করেনি। তবে অতি দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখে আর্থিক সহযোগিতার ব্যবস্থা করা হবে।

( সীমান্তবাংলা/০৭ডিসেম্বর/রহমান )


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরও খবর

Calendar

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
এক ক্লিকে বিভাগের খবর