প্রতিনিধি ৩ অক্টোবর ২০২০ , ৬:০৭:৪৮ প্রিন্ট সংস্করণ
মাত্র ৩ বর্গ কিলোমিটারের এই দ্বীপে ১২০০০ মানুষের ৩০০০ ঘরবাড়ী, ১১৬ আবাসিক হোটেল (অধিকাংশ বহুতল ভবন), সেই সাথে বহুতল স্কুল, হাসপাতালসহ অসংখ্য সরকারী স্থাপনা !
৬ মাসের পর্যটন মৌসুম গড়ে ১০,০০০ থেকে ১৫,০০০ হাজার পর্যটক ও স্থানীয়দের গৃহস্থালি বর্জ্য, সুয়ারেজ বর্জ্য, প্লাষ্টিক বর্জ্য, পরিষ্কারক ও কসমেটিক বর্জ্য এবং পর্যটকবাহী জাহাজের দূষণ ও সৃষ্ট পরিবেশগত সংকটের কারনে প্রবাল প্রাচীর সহ শৈবাল ও সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য মারাত্মক হুমকির মুখে।
ইতিমধ্যে দ্বীপের চতুর্পাশে ভাঙ্গনের পাশাপাশি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে প্রবাল দ্বীপটির ইকোসিস্টেম । ছড়িয়ে পড়েছে দূষণ জনিত বিদঘুটে দুর্গন্ধ। তাই এই দূষণ ও অপরিকল্পিত স্থাপনা নির্মান অব্যাহত থাকলে জলবায়ু পরিবর্তন ও সাগরের উচ্চতা বৃদ্ধির ফলে যেকোন মুহুর্তে সাগর গর্ভে হারিয়ে যেতে পারে দ্বীপটি।
সরকার সিধান্ত নিয়েছে সেন্টমার্টিন দ্বীপে রাত্রিযাপন ব্যাতিত প্রতিদিন ১২৫০ জন পর্যটক যেতে পারবে।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের অস্তিত্ব ও জীববৈচিত্র্য রক্ষার স্বার্থে আমরা Save The Nature of Bangladesh এর পক্ষ থেকে সরকারের এই সিধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি।
সেন্টমার্টিন_দ্বীপ_রক্ষায়_আমাদের_প্রস্থাবনা :
১| দ্বীপের মোট জনসংখ্যা ৫ হাজারে কমিয়ে এনে অন্যদের টেকনাফ উপজেলার মূল ভূখন্ডে ফিরিয়ে আনার মাধ্যমে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
২| অপরিকল্পিত অবৈধ ও সকল বহুতল ভবন অপসারন করে সীমিত পরিসরে পরিবেশবান্ধব ইকো-ট্যুরিজম গড়ে তোলা।
৩| সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য সুরক্ষায় বিশেষ স্থান সমূহে পর্যটকদের প্রবেশ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে ।
৪| সৌর বিদ্যুতের মাধ্যমেই দ্বীপের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরন করতে হবে। দ্বীপে জেনারেটর ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৫| পলিথিন,চিপসের প্যাকেট, প্লাষ্টিক পন্য, প্লাস্টিকের বোতলজাত পানিয় সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে।
৬| সেন্টমার্টিন দ্বীপের ভ্রমনকারী কোন পর্যটক সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষার সংরক্ষিত এলাকা ও ছেঁড়াদ্বীপ ভ্রমনে গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
অতি ক্ষুদ্র সেন্টমার্টিন দ্বীপ সুরক্ষায় সরকার দৈনিক ১০-১৫ হাজার পর্যটকের স্থলে, ১২৫০ জন পর্যটক যাওয়ার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। কিন্তু বহিরাগত কিছু অসাধু মুনাফালোভী ব্যবসায়ী যারা যুগ যুগ ধরে লুটেপুটে দ্বীপের অস্তিত্ব বিপন্ন করেছে তারাই আজ সরকারের সিদ্ধান্ত মানতে নারাজ। তারা চায় আরও অধিক পর্যটক নিয়ে গিয়ে সেন্টমার্টিন দ্বীপটি ধ্বংস করে দেয়ার জন্য। তারা চায় সোনার ডিমপাড়া হাঁস সেন্টমার্টিনকে জবাই করে একবারে খেয়ে ফেলতে !
লিখেছেনঃ
আ ন ম মোয়াজ্জেম হোসেন
প্রেসিডেন্ট, সেভ দ্যা ন্যাচার অব বাংলাদেশ