
ডেস্ক রিপোর্ট ;
আগামীকাল শুক্রবার (২৩ মার্চ) থেকে সারাদেশে শুরু হতে যাচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস পবিত্র রমজান। লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের রমজান । তেল, চিনি, ছোলা, মাংসসহ নানা নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের এই আগুন দাম মাথায় নিয়েই পবিত্র রমজান শুরু করতে যাচ্ছেন ভোক্তারা।
রমজান মাস আসলে বিশ্বের অন্যান্য মুসলিম দেশ ছাড়াও অনেক দেশে নিত্যপণ্যের দাম গ্রাহকদের জন্য কমিয়ে দেয়া হলেও বাংলাদেশে এর চিত্র দেখা যায় সম্পুর্ন বিপরীত। রমজানের ঠিক আগ মুহুর্তে দেশের কাঁচাবাজারসহ পণ্যসামগ্রীর দোকানগুলোতে অভাবনীয় হারে বেড়ে যায় নিত্যপণ্যের দাম। এবারের রমজানেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। ঠিক রমজানের কাছাকাছি সময়ে নয়, দু-এক মাস আগেই পণ্যের দাম বাড়িয়ে রাখেন ব্যবসায়ীরা। যাতে নতুন করে রমজানের সময় খুব বেশি বাড়াতে না হয় কিংবা বাড়ানোটা চোখে না পড়ে।
চলতি বছরও এক-দেড় মাস ধরে রোজায় বেশি ব্যবহৃত পণ্য খেজুর, ছোলা, ডাল, চিনি ও সয়াবিন তেলের দাম বাড়তি। একই সঙ্গে বেড়েছে মাছ, মাংস, ডিম, বিভিন্ন ধরনের ফল ও ইফতারের অন্য উপকরণের দামও।
বাজার সুত্রে জানা গেছে , এখন খোলা চিনির দাম ১১৫-১২০ টাকা কেজি ছুঁয়েছে, যা গত বছরের রমজানে ছিল ৮০ টাকার মধ্যে। অর্থাৎ চিনির ক্ষেত্রে ভোক্তার খরচ বেড়েছে ৪৮ শতাংশ। যদিও সরকার নির্ধারিত চিনির দাম ১০৭ টাকা, কিন্তু এ দামে ক্রেতারা কিনতে পারছেন না। একই অবস্থা সয়াবিন তেলের ক্ষেত্রেও। খোলা সয়াবিন ১৬৭-১৭২ টাকা লিটার দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গত রমজানে ১৪০ টাকার কমে পাওয়া যেত। বোতলজাত সয়াবিনের দাম প্রায় একই সময়ের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে এখন ১৮৫ থেকে ১৮৭ টাকায় কিনতে হচ্ছে। অর্থাৎ দাম বেড়েছে ১০ শতাংশের বেশি।
আবার বাজারে ইরাকের জাহেদি খেজুর ছাড়া ভালো মানের কোনো খেজুর ৪শ টাকার নিচে কেনা যাচ্ছে না। আমিরাতের নাগাল, দাবাস ও লুলু খেজুরের দাম ৬শ টাকা ছাড়িয়েছে। আর সৌদি আরবের আজওয়া, আম্বার কিংবা জর্ডানের মরিয়ম খেজুর কিনতে হলে গুনতে হবে হাজার টাকার বেশি। কেজিতে এগুলো যে পরিমাণে ধরে তাতে একটি খেজুরের দাম পড়ে ৮-১৬ টাকা পর্যন্ত।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি বলছে, গত বছরের চেয়ে চলতি বছর খেজুরের দাম ২০ শতাংশ বেশি। বর্তমানে বাজারে ১৫০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে খেজুর পাওয়া যাচ্ছে, যা গত বছর ১০০ টাকা পর্যন্ত কম ছিল। যদিও বাজারে এখন টিসিবির দামে খেজুর পাওয়া যায় না। বাজারে ছোলা ও অ্যাংকর ডাল কিনতে গুনতে হচ্ছে যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৩৩ ও ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি। এ দুই পণ্যের দাম বেড়েছে কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত। বেড়েছে সব ধরনের আমদানি ফলের দামও। বাজারে মানভেদে আপেলের দাম ২৫০-৩২০ টাকা, গত বছর ছিল ১৫০-২৩০ টাকা। বিভিন্ন ধরনের মাল্টা ও কমলা মিলছে ২০০-৩০০ টাকায়, গত বছর যা ছিল ১৪০-২২০ টাকার মধ্যে।
এদিকে রমজানে সুলভ মূল্যে দুধ, ডিম ও মাংস বিক্রির সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে মৎস ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রণালয়। যদিও এই কার্যক্রমটি ঢাকাতেই পরিচালিত হবে। তবে মন্ত্রণালয় সুলভ মূল্যে বিক্রির কথা বললেও সাধারণ মানুষ এই সুলোভ মূল্যকেও অতিরিক্ত মনে করছেন।