শুক্রবার, ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১৯ অপরাহ্ন

শিরোনামঃ
কক্সবাজারে বৃষ্টির রেকর্ড ২৪ ঘণ্টায় ৪০১ মিলিমিটার পাহাড় ধসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৩ জনের মৃ’ত্যু কক্সবাজারে পাহাড় ধসে একই পরিবারের ৩ জনের মৃ’ত্যু প্রতিষ্টাতা কমিটির উদ্যোগে রামু প্রেস ক্লাবের ৩৬ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপিত  নরসিংদীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য জনতা জুটমিল বন্ধ ঘোষণা নরসিংদীতে কারাগার থেকে লুট হওয়া শটগান ও চায়নিজ রাইফেলের ম্যাগজিন উদ্ধার উখিয়ায় কেন্দ্রীয় ফেমাস সংসদের দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন উখিয়ায় অরক্ষিত গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রির হিড়িক, আইনের কোন বালাই নাই সিলেটে বিমান থেকে উখিয়ার সালাউদ্দিন র‍্যাবের হাতে আটক।  বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি ও গতিধারা নতুন করে বিনির্মাণ করতে হবে ” মুহাম্মদ শাহজাহান
যে তরুণেরা বাংলাদেশকে বিশ্বজয়ের উপহার দিয়েছিল

যে তরুণেরা বাংলাদেশকে বিশ্বজয়ের উপহার দিয়েছিল

সীমান্তবাংলাঃ ২০২০ মানেই করোনা। আক্রান্তের খবর আর মৃত্যুর মিছিল। এর মধ্যে খেলা? চিন্তা করাও ছিল বাড়াবাড়ি। জীবনের চেয়ে খেলা বড় নয় মোটেও। অতিমারিতে জেরবার বিশ্বে মার্চ মাস থেকে বন্ধ ছিল খেলা, সব ধরনের খেলা। বাংলাদেশেও ভিন্ন কিছু ঘটেনি। বরং অন্য দেশগুলো যখন স্বাস্থ্যবিধি মেনে, দর্শকবিহীন মাঠে খেলা শুরু করেছে, বাংলাদেশ সেটি ভাবতেও পারেনি। ক্রিকেট, ফুটবল কিংবা অন্য যেকোবাংলাদেশের বিশ্বজয়ের উপহার যে তরুণেরানো খেলা। করোনার চোখরাঙানিতে বিবর্ণ হয়ে পড়েছিল খেলার মঞ্চ। অথচ ক্রিকেটে এ বছরটা সত্যিই অন্য রকম হতে পারত। বছরের বাংলাদেশের বিশ্বজয়ের উপহার যে তরুণেরাশুরুতেই প্রথমবারের মতো বিশ্বজয়ের আনন্দ ক্রিকেটকে দেখিয়েছিল অনেক স্বপ্ন। বছরের শেষ দিকে করোনা-আতঙ্ক কাটিয়ে মাঠে খেলা ফিরতেই দেখা গেল বছরের শুরুতে দেখা সেই স্বপ্ন মোটেও অমূলক ছিল না। এ বছরেই যে দেশের ক্রিকেটে নতুন সম্ভাবনার দিগন্ত খুলেছে।

৯ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ জিতল বাংলাদেশ। সে দলেরই বেশ কিছু খেলোয়াড় নিজেদের খেলা দিয়ে মন কাড়লেন সবার। তাঁদের মধ্যেই ক্রিকেটপ্রেমীরা খুঁজে ফেরা শুরু করল আগামী দিনের সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল কিংবা মাশরাফি বিন মুর্তজাকে। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর থেকেই যে দেশের ক্রিকেটে বড় তারকাদের রিলে ব্যাটন ভবিষ্যতে কারা নেবেন, কারও আদৌ নেওয়ার সামর্থ্য আছে কি না, সে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। খুশির কথা, অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সম্ভাবনার নতুন হাওয়া বইয়ে দিয়েছে। করোনার কারণে ঘরোয়া ক্রিকেট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নতুনদের সামর্থ্যের পরীক্ষা নেওয়া না গেলেও প্রায় আট মাস পর বিসিবির উদ্যোগে দুটি ঘরোয়া প্রতিযোগিতা (প্রেসিডেন্টস কাপ ও বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ) সেই আক্ষেপ মিটিয়ে দিয়েছে। এই দুটি টুর্নামেন্টই জানিয়ে দিয়েছে পাইপলাইনে নতুনের কেতন ওড়ানোর প্রতিভা আছে যথেষ্টই।

বিসিবি প্রেসিডেন্টস কাপ কিংবা বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপে অনেক সময় নতুনেরা ছাপিয়ে গেছেন পুরোনো–অভিজ্ঞদের। অনেকেই নজর কেড়েছেন। ইঙ্গিত দিয়েছেন একটু ঘষামাজা করলে তাঁরাও আগামীর তারকা হয়ে উঠতে পারেন। করোনার কারণে ক্রিকেটহীন এ বছরে সম্ভাবনা জাগানো তরুণদের মধ্যে আকবর আলী, পারভেজ হোসেন ও শরিফুল ইসলামদের নিশ্চিত করেই আগামীর বিজ্ঞাপন বলা যেতেই পারে…

আকবর আলী

তিনি বিশ্বকাপজয়ী অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অধিনায়ক। ফাইনালের ভারতের বিপক্ষে দলের বিপদের মধ্যে ৭৭ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেই তিনি তারকা। তাঁর মধ্যে খুঁজে নেওয়া যেতে পারে একজন ফিনিশারকে। তাঁর ব্যাট হাতে ম্যাচ শেষ করে আসার দক্ষতা অসাধারণ। এমন একজন ফিনিশারকেই যে অনেক দিন ধরে খুঁজছে বাংলাদেশের ক্রিকেট। বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের পারফরম্যান্স দিয়ে হয়তো পুরো সিদ্ধান্তে আসা যাবে না। তবে আকবরের ওপর এটা নিয়ে বাজি ধরাই যায়।

আকবরের মধ্যে আছে একজন খাঁটি ফিনিশারের ছায়া।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি আকবরকে সিনিয়রদের মঞ্চে দেখার একটা সুযোগ করে দেয়।। ৯ ইনিংসে বেক্সিমকো ঢাকার হয়ে ফিনিশারের দায়িত্ব পালন করেন আকবর। ১৫০ স্ট্রাইক রেটে ১৭১ রান করেন তিনি, পুরো টুর্নামেন্টে ছক্কা মেরেছেন ৯টি, চার ১২টি। মিনিস্টার গ্রুপ রাজশাহীর বিপক্ষে আকবরের ২৩ বলে ৪৫ রানের অপরাজিত ইনিংসটি আকবরের ম্যাচ শেষ করে আসার দক্ষতার প্রমাণ। জেমকন খুলনার বিপক্ষে ১৪ বলে ৩১ রানের ইনিংস আরেকটি ভালো উদাহরণ।

স্পিনের বিপক্ষে আকবর শেষের ওভারগুলোয় দুর্দান্ত। অনায়াসেই লং অন, লং অফ দিয়ে মাঠছাড়া করতে পারেন বোলারদের। মিডিয়াম পেসেও আকবরের পছন্দের জায়গা লং অন, লং অফ। হাই ব্যাক লিফট, পরিষ্কার ব্যাট সুইং—এই দুইয়ের মিশেলে বিশাল বিশাল ছক্কা মারতে পারেন আকবর। তবে আরও উন্নতির জায়গা আছে এই তরুণ ব্যাটসম্যানের। স্পিন ও মিডিয়াম পেসে স্বাচ্ছন্দ্যে খেললেও ৯০ মাইল গতির ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে আকবরের শেষ দিকের হিটিং কেমন হয়, সে পরীক্ষা এখনো বাকি।

আগামী বিপিএলে হয়তো আকবরের সেই পরীক্ষাটাই হয়ে যাবে, বিদেশি তারকা বোলারদের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ করে আসার দায়িত্ব চাপবে তখন আকবরের কাঁধে। তবে এখন পর্যন্ত আকবর দেশের ক্রিকেটের বড় এক সম্ভাবনাই।

পারভেজ হোসেন

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট কখনোই মনে জড়তা নিয়ে খেলা যায় না। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী দলের ওপেনার পারভেজ হোসেন ঠিক যেন টি-টোয়েন্টির জন্যই তৈরি। ছোট সংস্করণের ক্রিকেটে পূর্ণ ফায়দা নিতে জানেন এই তরুণ বাঁহাতি। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে ফরচুন বরিশালের হয়ে পারভেজের ৪২ বলের সেঞ্চুরিটি যেন বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নতুন ধারার বার্তা।

বছরের সবচেয়ে বিধ্বংসী ইনিংসটি খেলেছেন এই পারভেজ হোসেন।

বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে তিনি ৯ ইনিংসে করেছেন ২৩৩ রান। টুর্নামেন্ট স্ট্রাইক রেট ১৩০.৮৯ হলেও ৪২ বলে ১০০ রানের ইনিংসে পারভেজের স্ট্রাইক রেট ছিল ২৩৮! এ বছর বাংলাদেশের ক্রিকেটে পারভেজের ইনিংসটিই সবচেয়ে বিধ্বংসী ইনিংস। তবে শট নির্বাচন ও ১-২ রান নেওয়ায় আরও উন্নতি করার জায়গা আছে তাঁর।

শরিফুল ইসলাম

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের আগে থেকে থেকেই বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলাম ছিলেন নির্বাচকদের ভাবনায়। বিশ্বকাপ খেলার আগে ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রায় সব প্রতিযোগিতায় খেলেছেন এই শরিফুল। তবে কোথাও নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি। এবারের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টিতে অনেক পরিণত শরিফুলের দেখা মিলেছে।

শরিফুল গতি বিভাগে আশা বাড়িয়েছেন।

গাজী গ্রুপ চট্টগ্রামের হয়ে খেলেছেন ১০ ম্যাচে। নিয়েছেন ১৬ উইকেট। সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিলেন জাতীয় দলের বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানকে। জুটি বেঁধে গোটা টুর্নামেন্টেই প্রতিপক্ষকে কাঁপিয়েছেন তাঁরা। তবে টুর্নামেন্টে শরিফুলের ইকোনমি ছিল ৮। অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের বিপক্ষে বেশ কয়েকবারই খেই হারাতে দেখা গেছে এই তরুণ পেসারকে। তবু শরিফুল একটা সম্ভাবনা। বাংলাদেশের চিরায়ত পেস বোলিং দুর্বলতায় একপশলা বৃষ্টি তিনি। বাঁহাতি পেসার হিসেবে অ্যাঙ্গেল তাঁর দেখার মতো। সঙ্গে গতি ও বাউন্স যোগ করলে শরিফুলের ইতিবাচক অনেক কিছুই আছে। নতুন বলে তিনি যথেষ্টই ভালো।

পোষ্টটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© কপিরাইট ২০১০ - ২০২৪ সীমান্ত বাংলা >> এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পূর্ণ বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ

Design & Developed by Ecare Solutions