এত এত বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও ভূ- সম্পত্তির মালিক হওয়া সত্ত্বেও, মালেক সাহেব তার কর্তব্য কাজে বিন্দু পরিমান গাফিলতি করেন নি কিন্তু! আপনি যদি এত এত সম্পদের মালিক হতেন, এত ভূ-সম্পত্তির অধিকারী হতেন তাহলে কত আগেই দু’টাকার সরকারী চাকুরী জলাঞ্জলী দিয়ে নিজ বাসভুমে শুয়ে বসে, নাতি-নাতনীদের নিয়ে খেলা করতেন বা দেশে বিদেশে ঐতিহাসিক স্থান সমুহ ভ্রমনে ব্যস্ত হয়ে পড়তেন তার কোন ইয়াত্তা থাকতো কি?! উনি কিন্তু ডাকাত হলেও নিজের কাজের প্রতি অবিচল থেকে গেছেন একনিষ্টভাবে! সরকারী চাকুরে হিসেবে তার উপর অর্পিত দায়িত্ব তিনি যথাযথ পালন করেছেন জীবনের অন্তিম নিঃশ্বাস পর্যন্ত বৈকি ! কেন শুধু শুধু তার ব্যক্তিগত ব্যাপারে দূদক ইন্টারফেয়ার করতে গেলেন? উনি কি ইচ্ছে করলে কাশ ফুলের মত সফেদ দাড়িতে হাত বুলাতে বুলাতে তাবলিগের চিল্লা দিতে পারতেন না বা হিন্দি সিরিয়াল দেখে, নগ্ন-অর্ধনগ্ন ছবি দেখে দেখে বা কচিকাঁচা তরুনী-রমনীবেষ্টিত হয়ে এ-ই মর্ত্যে স্বর্গীয় সুখ ও সুধা ভোগ করে বাকি জীন্দেগী কাটিয়ে দিতে পারতেন না? তিনিও তো পারতেন গ্রামে গিয়ে অপরাধ জগৎ নিজ আয়ত্বে রেখে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে পড়ে, সমাজের মোড়ল সেজে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ইসলামের সবক দিতে! কিন্তু উনি বিবেক হারা হলেও, কিন্তু অনেকের মত নিমক হারাম ব্যক্তি নন! তাই তিনি তা করেননি, এটাই কি তার অপরাধ?!
তিনি তার দায়িত্ব ও কর্তব্যের প্রতি অবিচল থেকে প্রজাতন্ত্রের সেবা করে গিয়েছেন বরাবরই। জোচচুরি প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত নিষ্ঠার সাথে তার উপর দায়িত্ব চালকের আসনে ঠিকই থেকে গেছেন, পেশার প্রতি তার এই ইন্টেগ্রেটি ও ভালবাসা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার, বৈকি!
নিম্নে মহামান্য মালেক সাহেবের কিছু সম্পদের নমুনা আপনাদের জ্ঞাতার্থে পেশ করা হলঃ
নামঃ আবদুল মালেক,
পেশা ঃ ড্রাইভার, বাংলাদেশ স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
তিনি একজন ধার্মিক ও পরিশ্রমী ব্যক্তি।
এই অল্প চাকুরী জীবনে যা অর্জনঃ
মাত্র ১০ তলা একটি বাড়ি!
৭ তলা তিনটি বাড়ি!
২৪ টি ফ্ল্যাট!
তিনটি গাড়িসহ একশো কোটি টাকারও বেশি সম্পদের মালিক! তিনি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদের গাড়ি চালক ছিলেন। মহাপরিচালকের দুটি গাড়ির একটি গাড়ি তিনি নিজেই আবার ড্রাইভার রেখে ব্যবহার করতেন।
কি করলাম জীবনে!
ছেলের নামে করেছেন ডেইরী ফার্ম।
কোন পেশাই ক্ষুদ্র নয়, পরিশ্রম করুন ও সৃষ্টিকর্তার উপর নির্ভর করে ধর্মানুগামী হয়ে জীবন যাপন করুন।
একান্ত মনে সরল একটা প্রশ্ন জাগে, যিনি গাড়ি চালান উনি যদি এত সম্পদ, অর্থ বৈভব, প্রতিপত্তির মালিক হন, তাহলে যারা রীতিমত উনার গাড়িতে চড়েন, যাদের ত্যাগের সহস্র ভাগের নস্যি ভগ্নাংশ ড্রাইভার মালেক পেয়েছেন, সেইসব রাঘব বোয়ালদের সম্পদের পাহাড় কোন হিমালয় পর্বতকে ছাড়িয়ে গেছে, তা বলাই বাহুল্য!!
এ-ই মালেক সাহেবরা নিতান্ত চুনো পুঁটিমাত্র!!
লেখকঃ কলামিষ্ট আয়াজ রবি।