অপরাধ দূর্নীতি

মুক্তিপণে ছাড়া পাবার ১ ঘন্টার মধ্যে ফের ফিল্মী স্টাইলে ১ বাংলাদেশী ও ৭রোহিঙ্গাকে অপহরণ

  প্রতিনিধি ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ , ১২:০৩:৪৩ প্রিন্ট সংস্করণ

।। বিশেষ প্রতিবেদক ।।
মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পাবার এক ঘন্টার মধ্যে ফিল্মি স্টাইলে আবারো অপহৃত নারী শিশুসহ ৭ রোহিঙ্গা ও ১ বাংলাদেশী যুবকের সন্ধান মেলেনি গত এক মাসেও। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, কক্সবাজার সদর থানার অন্তর্গত পশ্চিম লার পাড়া, ১ নং ওয়ার্ডের বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে এক রোহিঙ্গা পরিবারের ৭জনসহ মোট ৮ জনকে বাসা থেকে কালো মাইক্রোবাসে তুলে দিনে দুপুরে নিয়ে যায় আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দেওয়া একদল সশস্ত্র দল। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগীর পরিবারের একজন কক্সবাজার সদর থানা , র‍্যাব ডিবি কার্যালয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।


অভিযোগসুত্রে জানা যায় অপহৃতরা হচ্ছেন-বাংলাদেশী আবদুল মালেকের ছেলে আবদুল হামিদ ( ৪১), রোহিঙ্গা আলী আহমদের স্ত্রী মিনারা বেগম (৩৯), আলী আহমদের যুবতী কন্যা রোজিয়া বেগম (১৫), রোকেয়া বেগম (১৩), মোহাম্মদ শাহ (১১), জয়নব বেগম (৮), মুহাম্মদ (৪) ও ছাবুত আলমের ছেলে সাদেক (৩৮)। কক্সবাজার সদর থানায় অভিযোগ সুত্রে আরো জানা যায়, অভিযোগকারী মহেশখালী উপজেলার ছোট মহেশখালী ইউনিয়নের ঠাকুর তলার বাসিন্দা রুপবান খাতুন (৬০) একজন বৃদ্ধা মহিলা। অপহৃত তার একমাত্র ছেলে আবদুল হামিদের সাথে অবস্থান করেন।তার ছেলে এক রোহিঙ্গা নারীকে বিয়ে করেন। বৃদ্ধার পুত্রবধুর নিকট আত্মীয় হ ওয়ায় একই পরিবারের ৬ জন রোহিঙ্গা টেকনাফ থেকে কক্সবাজার লার পাড়ায় তাদের আত্মীয়ের বাসায় আসার পথে বিগত ২৩ আগস্ট বিকাল ৫ টার দিকে কক্সবাজার সদর থানাধীন কলাতলী মোড় হতে নামপরিচয়বিহীন অজ্ঞাতনামা একদল অপহরণকারী তাদের তুলে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। হঠাত বিগত ২৬ আগস্ট অপহৃত আবদুল হামিদের স্ত্রীর মোবাইলে অপরিচিত মোবাইল থেকে ফোন করে বলে যে অপহৃতরা কক্সবাজার সদর থানার কলাতলী এলাকায় বন্দী করে রাখা হয়েছে। তারা মুক্তিপণ হিসেবে ১ লক্ষ দাবি করেন। একদিনের মধ্যে মুক্তিপণ দেওয়া না হলে এবং কোন চালাকি করে আইন শৃংখলা বাহিনীর কাছে জানালে অপহৃতদের জানে মেরে ফেলবে বলে হুমকিও প্রদান করা হয়।পরবর্তীতে ২৯ আগষ্ট বৃদ্ধার ছেলেসহ অপহৃত সাদেক কষ্ট বিষ্ঠ করে ১ লক্ষ জোগাড় করে দুপুর ৩ টার দিকে কলাতলি নামক স্থান থেকে এলাকাবাসীর সহায়তায় উক্ত অপহৃত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে বৃদ্ধার ছেলের বাসা লার পাড়ায় নিয়ে আসে। বাসায় আসার ১ ঘন্টার মধ্যে বিকাল ৪ টার দিকে হঠাত ৮/১০ জন ডিবি, ডিজিএফ আই পরিচয় দিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করে বাসার অন্যান্যদের আটক রেখে বৃদ্ধার ছেলেসহ তার স্ত্রীর আত্মীয়স্বজনদের আটক করে মোট ৮ জনকে নিয়ে যায় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।
অপহরণের দীর্ঘ প্রায় একমাস পরও আজ অবধি অপহৃতদের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। এদিকে অপহৃতদের পরিবারের অন্যান্য সদস্য তাদের স্বজনদের খোঁজে পাগলপ্রায় হয়ে উঠেছে। অপহৃত সাদেকের মা কান্নারত অবস্থায় অত্র প্রতিবেদককে জানান, “ আমার ছেলে আনোয়ার সাদেক নয়াপাড়া রেজিষ্টার্ড ক্যাম্পের একজন বাসিন্দা। মিনারা বেগম ও তার ২ যুবতী কন্যা ও ৩ শিশুর অপহরণের সংবাদ পেয়ে,অনেক কষ্ট করে অপহরণকারীদের দাবিকৃত ১ লক্ষ টাকা জোগাড় করে, তাদের উদ্ধারের জন্য কক্সবাজারের কলাতলিতে আসে। অপহরণকারীদের দাবিকৃত ১ লক্ষ টাকা প্রদান করে অপহৃদতদেরকে উদ্ধার করে তার চাচাত বোন, হামিদের স্ত্রীর বাসায় নিয়ে আসে। সাথে আমি ও অন্যান্যরা ছিলাম। এক পর্যায়ে ৮/১০ লোক আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয় দিয়ে আমাদেরকে একটি আলাদা ঘরে আটকে রেখে পুর্বের অপহৃতদের সাথে আমার ছেলে সাদেককেও নিয়ে যায়। আজকে প্রায় ১ মাস হচ্ছে-আমার ছেলেসহ অপহৃতরা কোথায় আছে,কেমন আছে চিন্তায় চিন্তায় আমার ভাত পানি না খেয়ে অসুস্থ হয়ে বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছি। আমার একমাত্র ছেলে, তার বাবা নেই। চার নাতি, তার বউ আর আমি আছি ক্যাম্পে’। তিনি দ্রুত তার ছেলেসহ অপহৃতদের উদ্ধারের জন্য প্রশাসনসহ সবার প্রতি আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

আরও খবর

Sponsered content