নরসিংদীর মনোহরদীতে কথা কাটাকাটির জেরে আব্দুল হামিদ নামে এক প্রধান শিক্ষকের বাড়ীতে ভাংচুর ও মালামাল লুটপাট ও হুমকী দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ২১ জানুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ১০ দিকে লেবুতলা ইউনিয়নের শরীফপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আব্দুল হামিদ স্থানীয় জেআরএস উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের ইউনিয়ন (সদর) সভাপতি ।
লেবুতলা ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক জাকির হোসেন শাহিন মোড়লের নির্দেশে তার কর্মীরা এ তান্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ ভূক্তভোগীদের। ঘটনার পর থেকে ভয়ে বাড়ী ছেড়েছেন প্রধান শিক্ষক ও তার দুই ভাই। নারীরাও রয়েছেন আতঙ্কে।
ক্ষতিগ্রস্তরা জানান, সোমবার সকাল ৮টার দিকে প্রতিবেশী মোখলেছুর রহমান ও মোস্তফা তাদের একটি কাঠাল গাছ কেটে ফেলে। এ নিয়ে মঙ্গলবার সকালে শিক্ষক আব্দুল হামিদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় মোখলেছ ও মোস্তফার। এসময় মোখলেছ উত্তেজিত হয়ে আব্দুল হামিদ, তার ভাই নজরুল ও রুহুল আমিনকে মারতে আসে। পরবর্তীতে সকাল ১০টার দিকে ২০-৩০জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আব্দুল হামিদের বাড়ীতে হামলা চালানো হয়। হামলাকারী সবাই বিএনপির নেতাকর্মী। তারা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহিন মোড়লের লোকজন বলে জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ক্ষতিগ্রস্ত পাপিয়া আক্তার ও সানিয়া সুলতানা বলেন, হামলাকারীরা ঘরের প্রবেশ করে নগদ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, সেলাই মেশিন, আলমিরা, ফ্রিজ, মোটরসাইকেল ভেঙ্গে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। এমনকি চালের ড্রাম ও পানি উঠানেরার মটর পর্যন্ত নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী জহিরুল ইসলাম বলেন, শাহিন মোড়লের নির্দেশে তার লোকজন এই ভাংচুর ও লুটপাট চালিয়েছে। এই পরিবারে আর কিছুই রইল না। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই।
প্রতিপক্ষ মোখলেছুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক ও তার ভাইয়েরা আওয়ামীলীগ সমর্থক। বাড়ীর পাশে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এসময় তারা আমার বোনকে মারতে আসে। বিষয়টি আমি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শাহিন মোড়লকে জানালে তিনি লোকজন পাঠিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা এমনটা চাইনি। তাছাড়া আমরা ঘটনার সময় বাড়ীতে ছিলাম না।
লেবুতলা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. জাকির হোসেন শাহিন মোড়ল বলেন, ‘ এটা তাদের পারিবারিক ঝগড়া। সেখানে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই। তাছাড়া বিষয়টি আমার জানা ছিল না।’
মনোহরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল জব্বার বলেন, ‘মৌখিক অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’