সীমান্তবাংলাঃ রােহিঙ্গাদের বিনােদনের জন্য পিকনিকের আয়ােজন করেন ভাসানচরে; নৌ-বাহিনীর সদস্যরা। এতে শিশু ও প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষও নারীদের অংশগ্রহনে ক্রীড়া প্রতিযােগীতা, দুপুরে চট্রগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান, বিকালে মনােঙ্গ সাস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ভাসানচরের ৫নংক্লাস্টারের পাশে খেলার মাঠে বিশাল প্যান্ডেল তৈরী করে এসব আয়ােজন করা হয়।
মারবেল দৌড় প্রতিযােগীতায় অংশগ্রহন করে প্রথম হয়েছে উর্মি নামের ৯ বছরের এক রােহিঙ্গা শিশু। সে ১নং ক্লাস্টারের ৮ নম্বর বাসায় বসবাস
করে। আলাপ কালে উর্মির ভাই রাকিব (১৫) জানায় আজকে আমাদের কাছে ঈদের মত মনে হয়েছে।
আমরা সবাই অনেক আনন্দ করছি। এদিকে ২৮ মন মাংস ও ২০ মন ডাল দিয়ে তৈরী করেন চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী মেজবান। এ জন্য চট্রগ্রাম থেকে আনা হয় ১৫ জন অভিজ্ঞ বাবুর্চি। ৩ হাজার ৭ শত ৫২ জন রােহিঙ্গাসহ ৪ হাজার লােককে দুপুরে খাওয়ার রান্না করেন তারা।
এর আগে সকালে রােহিঙ্গা শিশুদের অংশগ্রহনে ছিল ক্রীড়া প্রতিযােগীতা। যাতে শিশুরা দৌড়, মােরগের লড়াই, রশিটানাটানিসহ নানান প্রতিযােগীতায় অংশগ্রহন করেন। নারীদের বালিশ খেলা ছিল চোখে পড়ার মত।
এ জন্য মাঠের মাজখানে বেশ কিছু চেয়ার দিয়ে তৈরীকরা হয় খেলার প্যান্ডেল।
বালিশ খেলায় অংশ নিতে আসেন মিনােয়ারা বেগম (৩০)। তিনি বসবাস করেন ১০নং ক্লাস্টারের ১৩ নম্বর বাসায়। আলাপ কালে মিনােয়ারা জানায়, ভাসানচর আমাদের কাছে খুবই ভালাে লাগে। তবে কাজ না থাকায় অলস সময় পার করতে হচ্ছে। আজকের এই আয়ােজন আমাদের সকলকে অনেক আনন্দ দিয়েছে।
বিকালে ভাসানচরের রােহিঙ্গা মিউজিক ক্লাবের শিল্পীদের অংশগ্রহনে অনুষ্ঠিত হয় মনােজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
যাতে রােহিঙ্গাদের জীবন মান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে রােহিঙ্গা শিল্পীরা বিভিন্ন গান পরিবেশন করেন। এ সময় মাঠের চার পাশে অবস্থান করা নৌ-বাহিনী, পুলিশ ও কোষ্টগার্ডের সদস্যরা শিল্পিদেরকে হাত তালি দিয়ে অভিনন্দন জানান। সব শেষে বিকালে বিভিন্ন খেলায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করা রােহিঙ্গা শিশু, নারী ও পুরুষদের পুরস্কৃত করা হয়।
এদিকে প্রথম দাপে ১৬ শত ৪২ জন, দ্বিতীয় দাপে ১ হাজার ৮ শত ৪ জন রহিঙ্গা সদস্য আনুষ্ঠানিক ভাবে নিজেদের ইচ্ছায় ভাসানচর আসেন।
এর আগে পালিয়ে বিদেশ যাওয়ার সময় নৌ-বাহিনীর সদস্যরা আটক করে ৩০৬ জন রহিঙ্গাকে ভাসানচর নিয়ে আসে।
এনিয়ে মােট ৩ হাজার ৭ শত ৬২ জন রহিঙ্গা ভাসানচর অবস্থান করছে।সরকারি তথ্য অনুযায়ী, রােহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে।
সরকার সেখানে এক লাখ রােহিঙ্গা বসবাসের উপযােগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামাে তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরাে আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।
(সীমান্তবাংলা/R.M.R/২১ জানুয়ারি ২০২১ ইং)