প্রতিনিধি ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ , ৩:১৮:৪৯ প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপির শাসন আমলে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়নি বলে দাবি করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ দাবি করেন।
এর আগে সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০০১ সাল থেকে যে সংখ্যালঘু নির্যাতন এদেশে হয়েছে এটা কেবলমাত্র একাত্তরের বর্বরতার সাথে তুলনা হয়। বিএনপি যতোই সত্যকে চাপা দিতে চেষ্টা করুক না কেন, তখন কীভাবে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার হয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর। ওই অবস্থায় দেশ থেকে পালানোই ছিল স্বাভাবিক। অনেকেই জানমালের নিরাপত্তার জন্য সেদিন পালিয়েছেন। বাংলাদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে যে সংখ্যালঘুরা ভারতে চলে গেছেন, তারা দেশে ফিরতে চাইলে গ্রহণ করা হবে।’
সম্প্রতি ভারতের পার্লামেন্টে সে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অতিম শাহ বলেন, ‘বিএনপি সরকারের আমলে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর ব্যাপক নির্যাতন হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হিন্দু সম্প্রদায় ভারতে পালিয়ে এসেছে।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এবং ভারতের বিজেপির সভাপতি অতিম শাহ’র এই বক্তব্যের জবাবে রিজভী বলেন, ‘আমরা আবারও দ্যর্থহীনভাবে বলছি, ২০০১ সাল কেন, বিএনপির কোনো শাসন আমলেই দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’
তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল ধরে একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান থেকে শুরু করে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি সরকারের সময় বরাবরই বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন ছিল। এমনকি বাবরি মসজিদ সংকট এবং গুজরাট-দাঙ্গার সময় এবং খালেদা জিয়ার আমলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অটুট বাঁধনে কোন চিড় ধরেনি। এক কথায় বলতে গেলে বিএনপির সরকারের সময় সংখ্যালঘুদের সর্বোচ্চ স্বার্থ রক্ষিত হয়েছে। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে সফল হয়েছে। কেউ নির্যাতনের শিকার হয়ে কোথাও যায়নি।’
‘আর ঠিক বিপরীত হলো আওয়ামী লীগ। সংখ্যালঘুদের ওপর আওয়ামী লীগ আমলে যত নিপীড়ন হয়েছে, তা আর কখনও হয়নি। আওয়ামী ঘরানার বুদ্ধিজীবীদের লেখাতেই তার ভুরিভুরি প্রমাণ রয়েছে। হোয়াইট হাউজে ১৭ জুলাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সাথে এক সাক্ষাতের সময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু অধিকার সংগঠন হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা অভিযোগ করেন তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‘নিখোঁজ’ হয়েছে’— বলেন রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘প্রকৃতপক্ষে মিয়ানমার যেমন রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে নির্যাতনের মুখে রোহিঙ্গাদের রাষ্ট্রহীন করে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করেছে, একইভাবে নাগরিকত্ব আইন এবং নাগরিকপুঞ্জি (এনআরসি) জটিলতায় সংখ্যালঘু ভারতীয় মুসলমানদের রাষ্ট্রহীন ঘোষণা করে জোরপূর্বক বাংলাদেশে পুশ-ইন করার প্রক্রিয়া লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশ সরকার এনআরসি বিষয়টিকে বারবার ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু আখ্যা দিতে এড়িয়ে যাচ্ছে।’