নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনুস স্যার বাংলাদেশের Chief Adviser (প্রধান উপদেষ্টা) হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনুস ২০২৪ সালের আগস্টে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তাঁর নেতৃত্বাধিন গৃহীত হয়েছে, জাতীয় অর্থনৈতিক সংস্কার ও অনেক অবদান।
● মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যাংকিং খাত সংস্কার ;
ড. ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আহসান এইচ মানসুরকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন, যেমন: সরকারি ঋণের জন্য টাকা ছাপানো বন্ধ করা, নীতিগত সুদের হার বৃদ্ধি এবং
সরকারি ব্যয় হ্রাস। এই পদক্ষেপের ফলে সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয় ৮০% বৃদ্ধি পেয়ে ২.৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।
● প্রবাসী আয় ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি ;
সরকার প্রবাসী আয় বৈধ আনুষ্ঠানিক চ্যানেলের মাধ্যমে পাঠাতে উৎসাহিত করে এবং অর্থপাচার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ পরিস্থিতির উন্নতি ঘটায়।
● ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন ;
ড. ইউনুসের সরকার SpaceX-এর Starlink-এর সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি সম্পাদনের ঘোষণা দেয়, যার মাধ্যমে সারা দেশে নির্ভরযোগ্য স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা প্রদান করা হবে। এর ফলে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও উদ্যোক্তাদের জন্য ডিজিটাল সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।
● দুর্নীতি দমন ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ;
সরকার ছয়টি কমিশন গঠন করে ভোেট জালিয়াতি প্রতিরোধ, বিচার বিভাগ, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংবিধান সংস্কারের ব্যাবস্থা গ্রহণ করে। এছাড়া, দুর্নীতির মাধ্যমে বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়।
● আন্তর্জাতিক অবদান ও সহযোগিতা ;
ইউরোপীয় দেশগুলোর বিনিয়োেগ ব্যাংকের (EIB) অর্থায়ন বৃদ্ধি- ইআইবি’তে বাংলাদেশে তাদের অর্থায়ন ২ বিলিয়ন ইউরোতে দ্বিগুণ করার ঘোষণা দেয়, যা মূলত সবুজ জ্বালানি, নিরাপত পানি, যোগাযোগ ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় ব্যবহৃত হবে।
● যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব ;
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ, অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা ও গবেষণা, উদ্যোক্তা উন্নয়ন এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব নিয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি পায়। ড. ইউনুসের নেতৃত্বে এই অংশীদারিত্ব নতুন উচ্চতায় পৌঁছে।
● অতীতের আন্তর্জাতিক অবদান ;
ড. ইউনুস ১৯৮৩ সালে গ্রামীণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করে মাইক্রোক্রেডিটের মাধ্যমে দরিদ্রদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন করেন। এই মডেলটি বিশ্বের ৬৪টি দেশে গৃহীত হয়েছে। তিনি গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ ড্যানোন ফুডস, গ্রামীণ হেলথ সার্ভিসেস সহ ২৮টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখেন।
● বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ;
টেলিকম, গ্রামীণ ড্যানোন ফুডস, গ্রামীণ হেলথ সার্ভিসেসসহ ২৮টি প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও কৃষিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সংস্কার, ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়ন, দুর্নীতি দমন এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রশংসিতভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাঁর অতীতের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান উদ্যোগ বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি নতুন দিগন্তে নিয়ে যাচ্ছে।
লেখক : মোসলেহ উদ্দিন ; সংবাদকমী