প্রতিনিধি ২৬ ডিসেম্বর ২০১৯ , ২:১৪:৪২ প্রিন্ট সংস্করণ
প্রচণ্ড শীতে পাবনার জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পদ্মা-যমুনা নদী বেষ্টিত পাবনায় গত ৭ দিন ধরে প্রচণ্ড শীত এবং হিমেল হাওয়া প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জনজীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে। মধ্যরাত রাত থেকে প্রকৃতি ঢাকা থাকছে ঘন কুয়াশায়। এক সপ্তাহ ধরে সারাদিন সূর্যের দেখা মেলেনি। দুপুর ১২টা পর্যন্ত মহাসড়কগুলোতে হেড লাইট জালিয়ে যানবাহন চলছে। শীতের সঙ্গে হিমেল হাওয়া জনজীবনকে আরও বিপর্যস্ত করে তোলে।
শীতে শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের এবং চরাঞ্চলের মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। প্রচণ্ড শীতে তারা ঠিকমতো কাজে বের হতে পারছেন না। গত ১০ দিন ধরে এ অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বাড়লেও গত ৭ দিন থেকে শুরু হয়েছে শৈত প্রবাহ। অধিকাংশ সময় আকাশ মেঘাচ্ছন এবং হিমেল হাওয়ায় শীত জেঁকে বসেছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস আরও জানায়, এক সপ্তাহ ধরে এ অঞ্চলে তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে উঠা-নামা করছে। এদিকে শীতে এ অঞ্চলে দুস্থ মানুষের মধ্যে শীতবস্ত্রের সংকট দেখা দিয়েছে।
পাবনার জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ জানান, প্রতিদিনই তার দপ্তরে শীতবস্ত্রের জন্য জনপ্রতিনিধিরা আবেদন করছেন। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় ৪৮ হাজার কম্বল পাঠানো হয়েছে। আরও শীতবস্ত্রের জন্য চাহিদা পাঠানো হয়েছে।
পাবনা জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ অধিপ্তরের উদ্যোগে গত ৩ দিন ধরে রাতে সদর উপজেলার বিভিন্নস্থানে শীতবস্ত্র বিতরণ করেন জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ। এসময় জেলা প্রশাসক বেসরকারি পর্যায়ে বিত্তবানদের শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।
এ দিকে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শীতজনিত কারণে নারী-পুরুষ ও শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ২ শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ভর্তি হয়েছেন।
পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক রঞ্জন কুমার দত্ত জানান, গেল ২৪ ঘণ্টায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ শীত জনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে ২ শতাধিক নারী-পুরুষ ও শিশু ভর্তি হয়েছেন।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় বেড না পেয়ে অনেক আক্রান্ত নারী-পুরুষ, শিশু মেঝেতে শুয়েই চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের। নিম্ন আয়ের মানুষগুলো শহরের পুরাতন গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন গরম কাপড় কিনতে। শহরের বিভিন্ন মার্কেটের বিপণী বিতানে বিত্তবান ও মধ্যবিত্তরা ভিড় জমিয়েছেন গরম কাপড় কেনার জন্য। গ্রামগঞ্জের অসহায় মানুষগুলো খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।