শাকসবজি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত নরসিংদী জেলায় ১০ হাজার ৪১৭ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজির চাষ করা হয়েছে। নরসিংদী জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলায় ১০ হাজার ৬৬৪ হেক্টর জমিতে শীতকালীন শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর বিপরীতে এখানে ১০ হাজার ৪১৭ হেক্টর জমিতে শাকসবজির চাষ করা হয়েছে এবং উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৩ লাখ ৩৫ হাজার ৪৯ মেট্রিক টন। উপজেলাওয়ারী হিসাবে নরসিংদী সদর উপজেলায় ২ হাজার ৭৩৭ হেক্টর, পলাশে ৫১৫ হেক্টর, শিবপুরে ১ হাজার ৫৮৩ হেক্টর, মনোহরদীতে ৬৯৪ হেক্টর, বেলাবোতে ২ হাজার ৭৬ হেক্টর ও রায়পুরা উপজেলায় ৩ হাজার ১১২ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষ করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে স্থানীয় বিভিন্ন হাটবাজারে আগাম শীতকালীন শাকসবজি উঠতে শুরু করেছে। কৃষকরা শাকসবজির ভালো দাম পেয়ে খুশি। শীতকালীন শাকসবজির মধ্যে রয়েছে লাউ, উচ্ছে, ফুলকপি, বাঁধাকপি, চিচিংগা, বেগুন, বরবটি, মুলা, কইডা, শিম, শসা, চালকুমড়া, টমেটো, ঢেঁড়স, মিষ্টিকুমড়া, মটরশুঁটি ইত্যাদি।
সূত্রটি আরও জানায়, জেলায় ১ হাজার ৩১৫ জন কৃষকের মধ্যে প্রণোদনাস্বরূপ সার ও বীজ বিতরণ করা হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সার, বীজ ও রোগবালাই কীটনাশক বিতরণ করা হয়।
শিবপুর উপজেলার পুটিয়া ইউনিয়নের কামারগাঁও গ্রামের কৃষক আরিফ মাহমুদ বলেন, এ বছর তিনি তার ৫ বিঘা জমিতে ফুলকপি, বাঁধাকপি ও লাউয়ের চাষ করেছেন। ফলনও হয়েছে বেশ ভালো। ইতোমধ্যে তিনি লাউ ও ফুলকপি উত্তোলন করে বাজারে নিয়ে ৭৫ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। এ বছর সবজির দাম খুবই ভালো। সবজির দাম পেয়ে তিনি অত্যন্ত খুশি।
বেলাব উপজেলা আলতাফ হোসেন জানান, এ বছর তিনি কৃষি বিভাগের মাঠ কর্মীদের পরামর্শ নিয়ে ৬ বিঘা জমিতে বেগুন, শিম, টমেটোসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করেছেন। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় এ বছর ফলন খুব ভালো হয়েছে।
রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ গ্রামের কৃষক তাজুল ইসলাম বলেন, এ বছর তিনি তার ৪ বিঘা জমিতে শাকসবজির চাষ করেছেন। এ বছর ফলন খুব ভালো হয়েছে। সবজির দামও বেশ ভালো। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ১ লাখ টাকারও বেশি সবজি বিক্রি করেছেন। এ সময় তার মুখে হাসির ঝিলিক ফুটে উঠছিল।
নরসিংদী জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মো. আজিজুর রহমান জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ফসল বেশ ভালো হয়েছে। সামনে কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও অধিক ফসল উৎপাদিত হবে।