
মহেশখালী প্রতিনিধি:
কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া মঈনুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসায় চলমান দাখিল পরীক্ষা কেন্দ্রের সচিবকে বহিষ্কার করে নতুন কেন্দ্র সচিব নিয়োগ করা হয়েছে।
রবিবার (৭ মে) এ অব্যাহতির আদেশ দেওয়া হয় । এক অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ইয়াছিন।
বহিষ্কৃত সচিবের নাম মুবিনুল হক। সে কালারমারছড়া মঈনুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ। তার স্থলে নতুন কেন্দ্র সচিব নিয়োগ দেয়া হয়েছে উপজেলার মাতারবাড়ী মজিদিয়া আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ইদ্রিস ফারুকীকে।
তথ্যসূত্রে জানা গেছে, চলমান দাখিল পরীক্ষায় অধ্যক্ষ মুবিনুল হকের একজন চাচাত বোন পরিক্ষার্থী। (৭ মে) রবিবার ছিল গণিত পরীক্ষা। ঐদিন তার বোনকে নকল দেয়ার সময় দেখে পেলেন মাতারবাড়ী মজিদিয়া মাদ্রাসার ডিউটিরত শিক্ষক মৌলভী সাগর। তাৎক্ষণিক বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করলে অধ্যক্ষের সাথে তার হাতাহাতি হয়। পরের পরীক্ষায় হলে ডিউটি করতে গেলে এলাকার কিছু লোকজন তাকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান এবং বিষয়টি ধামাচাপা দিতে বলেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মুবিনুল হকের মুঠোফোনে সংযোগ না পাওয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কালারমারছড়া মঈনুল ইসলাম আলিম মাদ্রাসার
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, তিনি দীর্ঘ বছর ধরে পরীক্ষার হলের সুযোগটি কাজে লাগিয়ে ইচ্ছেমত প্রভাব বিস্তার করতেন এবং পরীক্ষা কেন্দ্রের বাজেটের আয়ব্যয় হিসাব কাউকে কোন বছর দিতেন না।
আরেকজন শিক্ষক জানান, কক্ষে নকল সাপ্লাই দেয়া ও নিজ প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের জন্য সুবিধামত সিটপ্লেন বসানো তার নিত্যনৈমিত্তিক কাজ। সে বিভিন্ন সময় মাদ্রাসার ছাত্র-ছাত্রীদের পাশের কথা বলে কন্ট্রাক্ট নিতেন। সে লক্ষ্যে পরীক্ষা শেষে স্ব প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের ওএমআর সিট পূরণ ও এমসিকিউ ভরাট নিজ কক্ষে বসে অন্যান্য শিক্ষকদের দিয়ে করাতেন। অধ্যক্ষ এসব অনিয়মগুলো করতে তার প্রতিষ্ঠানের আরেক শিক্ষক মৌলভী কফিল উদ্দিনকে ব্যবহার করতেন।
দাখিল পরীক্ষার্থীরা জানান, অধ্যক্ষ মুবিনুল হক স্ব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রতিবছর নকল সাপ্লাই দেন। গণিত পরীক্ষার দিন তার প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার্থীদের ক্যালকুলেটর ব্যবহারে সুযোগ দেন। অথচ আমাদের ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি। কিছু ছাত্র প্রতিবাদ করলে মৌলভী কফিল উদ্দিন তাদের ২০২৪ সালের জন্য প্রস্তুতি নিতে বলেন।
মুবিনুল হকের বিরুদ্ধে দীর্ঘ বছর ধরে নানা প্রতিষ্ঠানের অভিযোগ রয়েছে। ২০২২ সালে ১৪জন পরীক্ষার্থীর খাতা কেড়ে নিয়ে ফেল করিয়ে দেয়া এবং ২০১৫ সালের জেডিসি পরীক্ষার সাতটি খাতা হল থেকে দুইশ মিটার দুরের একটি বাড়িতে লেখার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে। ঐ ঘটনায় জড়িত ৫ জন শিক্ষককে জেল ও জরিমানা দিয়েছিলেন সেই সময়ে পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা মহেশখালী এসিল্যান্ড শামীম হোসেন।