প্রতিনিধি ২ অক্টোবর ২০২০ , ১২:৪৯:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
স্বল্পমূল্যে প্লট পাওয়ার কথা বলে প্লটপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা করে নিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার চুক্তি করেছে তিতাসের তৃতীয় শ্রেনীর সাবেক কর্মচারী নাসিমের “নাসিম রিয়েলে এস্টেট”। রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার কথা বলে সাড়ে ১২ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা করে একেকজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে নিয়ে নাসিম রিয়েল এস্টেটর মালিক প্রায় ৩শ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
নাসিম ছিলেন ৫৫টি মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত পলাতক আসামি।
বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর রূপনগর আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে তার সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- মো. ইমাম হোসেন নাসিম (৬৬) ও তার সহযোগী তৃতীয় স্ত্রী হালিমা আক্তার সালমা (৩২)।
এসময় তাদের কাছ থেকে একটি ৭.৬৫ মিমি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, তিন রাউন্ড গুলি, এক লাখ ৩৫ হাজার জাল টাকা, ১৪শ পিস ইয়াবা, দুই বোতল বিদেশি মদ, চারটি ওয়াকিটকি সেট, ছয়টি পাসপোর্ট, ৩৭টি ব্যাংক চেক বই এবং ৩২টি সিম কার্ড জব্দ করা হয়।
বৃহস্পতিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক (সিও) অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, এই প্রতারকের বাবা-দাদার বাড়ি ভোলায়।
দেশ স্বাধীনের আগে তার বাবা ও বেলায়েত হোসেন গ্রাম্য ডাক্তার ছিলেন। তাকে নিয়ে তার বাবা রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় চলে আসেন। পরবর্তীসময়ে মিরপুর এলাকায় পড়ালেখা করেন। ১৯৭৮ সাল থেকে ১৯৮২ বা ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিতাসের তৃতীয় শ্রেণির ঠিকাদার হিসেবে কাজ করেছেন। এরপরে ২০০২ সালে নাসিম রিয়েল এস্টেট নামে একটি রিয়েল এস্টেট কোম্পানি গড়ে তোলে।
সাভারের কাউন্দিয়া এলাকায় সাইনবোর্ড দিয়ে কিছু খাসজমি, দখল করা জমি ও পানিপূর্ণ জমি দেখিয়ে স্বল্পমূল্যে জমি পাওয়া যাচ্ছে বলে সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়। স্বল্পমূল্যে প্লট পাওয়ার কথা বলে প্লটপ্রতি পাঁচলাখ টাকা করে নিয়ে প্রায় পাঁচ হাজার চুক্তি করার কথা জানা যায়। রেজিস্ট্রেশন করে দেওয়ার কথা বলে সাড়ে ১২ লাখ থেকে ২০ লাখ টাকা করে এক একজন ভুক্তভোগীর কাছ থেকে নিয়েছে। সব মিলিয়ে এভাবে ৩শ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে সে।
বিভিন্ন সময়ে নামে-বেনামে ৩২টি সিমকার্ড ব্যবহার করে প্রতারণার শিকার মানুষদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে চলে যেতেন। অস্ত্র প্রদর্শন ও ওয়াকিটকি দেখিয়ে নিশ্চিত করতেন নিজের নিরাপত্তা। গ্রেফতার এড়াতে আন্ডারগ্রাউন্ডে তার গোপন সুড়ঙ্গে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সম্বলিত দরজার গোপন অফিসে আত্মগোপনে থাকতেন। নাসিমের অনুপস্থিতিতে প্রতারণার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন তার তৃতীয় স্ত্রী হালিমা আক্তার।
সীমান্তবাংলা/ শা ম / ১ অক্টোবর ২০২০