ঢাকাবুধবার , ১৮ ডিসেম্বর ২০১৯
  1. অপরাধ দূর্নীতি
  2. অর্থনীতি
  3. আইন আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. কক্সবাজার
  6. খেলাধুলা
  7. চকরিয়া
  8. চাকরির খবর
  9. ছবি ঘর
  10. জাতীয়
  11. ধর্ম ও জীবন
  12. পরিবেশ প্রকৃতি
  13. পর্যটন
  14. পার্বত্য চট্টগ্রাম
  15. প্রবাসের খবর
আজকের সর্বশেষ সবখবর

ড্রাগন চাষে স্বাবলম্বী মনোহরদীর মুখলেছ

Ecare
ডিসেম্বর ১৮, ২০১৯ ২:০০ অপরাহ্ণ
Link Copied!

বহুমুখী পুষ্টি গুণে সমৃদ্ধ বিদেশি এক ফলের নাম ড্রাগন। দক্ষিণ আমেরিকার গভীর অরণ্যে এই ফলের জন্ম হলেও বর্তমানে থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, চীন এবং ভারত সহ দিন দিন সাড়া পৃথিবী জুড়ে এই ফলের জনপ্রিয়তা বেড়েই চলছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানেও এই পুষ্টিকর ফল ড্রাগনের চাষ দিন দিন বেড়ে চলছে। এবং সফলতাও পেয়েছে বিভিন্ন এলাকার ড্রাগন চাষীরা। ইউটিউবে ড্রাগন চাষে বিভিন্ন এলাকার চাষীদের সফলতার ভিডিও দেখে অনুপ্রাণিত হয়ে ড্রাগন চাষ করেছেন মনোহরদী উপজেলার মুখলেছুর রহমান।

আর এই ড্রাগণ চাষেই নিজে অর্থনৈতিক দিক দিয়ে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি নিজের উপজেলায় ড্রাগণ চাষের বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রে অনন্য অবদান রাখার স্বপ্ন দেখছেন এই মুখলেছুর রহমান।

নরসিংদী জেলার শুকুন্দী ইউনিয়নের দীঘাকান্দী গ্রামের কৃষক তমিজ উদ্দিনের ঘরে জন্ম মুখলেছুর রহমানের। স্থানীয় এক কলেজ থেকে এইচ এস সি পাশ করার পর আর লেখা পড়া করা হইনি মুখলেছুর রহমানের। এইচ এস সি পাশ করার কিছুদিন পর একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকুরী নেন তিনি। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হার ভাঙ্গা খাটুনী অনুযায়ী পারিশ্রমিক কম থাকায় সেখানে নিজেকে খুব বেশি আবদ্ধ রাখতে মন চাননি নিজেকে। মানষিক অসস্থির সেই জায়গা থেকে নিজেকে মুক্ত করতে চাতক পাখির মত ছটফট করতে থাকে। এরই মাঝে ইউটিউব থেকে অত্যন্ত লাভজনক ফল ড্রাগন চাষের ভিডিও দেখে ড্রাগন চাষের প্রতি তার আগ্রহ বাড়ে। এবং ইউটিউব থেকেই ড্রাগন চাষের ব্যাপারে তথ্য নিতে থাকে। এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সে চাকুরি ছেড়ে দিয়ে নিজের উদ্যোগে গ্রামের বাড়িতে ড্রাগন বাগান গড়ে তুলার কাজ শুরু করে।

ড্রাগন চাষের বিষয়ে নিজের বাগানে বসে কথা হয় মুখলেছুর রহমানের সাথে। তিনি জানান, চাকুরি ছেড়ে দিয়ে এসে প্রথমে প্রতিবেশি এক কৃষকের কাছ থেকে দুই বিঘা জামি লিজ নেই। দশ বছরের জন্য জমির মালিককে দিতে হয়েছে এক লক্ষ ষাট হাজার টাকা। এর পর পাশবর্তী উপজেলার আরেক সফল ড্রাগন চাষির পরামর্শক্রমে সে জমি প্রস্তুত করে। জমিতে নির্দিষ্ট পরিমাণ দূরত্ব বজায় রেখে মোট তিন’শ পঞ্চাশটি সিমেন্টের খুঁটি স্থাপন করে প্রত্যেক খুঁটির মাথায় একটি করে পরিত্যাক্ত ইজিবাইকের ট্রায়ার বেধেঁ দেয়া হয়।

এর পর প্রতিটি খুঁটির সাইডে গর্ত করে কম্পোষ্ট সার প্রয়োগ কার হয়া। এরপর নাটোর থেকে আনা হয় মোট বারো হাজার টাকার ড্রাগনের ছোট চার গাছ। দুই বিঘা জমিতে মোট সাড়ে তিন’শ সিমেন্টের খুঁটির প্রত্যেকটি খুঁটির চার পাশের্^ চারটি চারা করে মোট চৌদ্দ’শ ড্রাগনের চারা রোপন করা হয়। ইতি মধ্যে বাগানের বয়স প্রায় পাঁচ মাস হয়। এতে বাগানে এ পর্যন্ত প্রায় দশ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানায় ড্রাগন বাগানের স্বপ্ন সারথি মুখলেছুর রহমান।

সরেজমিন বাগানটি পরিদর্শন করে দেখা যায়, ক্যাকটাস গাছের মতো দেখতে ড্রাগনের সবুজ গাছ গুলো বেড়ে ইতি মধ্যে সিমেন্টের খুঁটির মাথা ছুঁই ছুঁই করছে। ড্রাগন চাষের জন্য আবহাওয়া অনুকূলে থাকার কারণে ইতি মধ্যে ড্রাগনের চারাগগুলো বেশ পরিপক্কও হয়ে উঠেছে।

এর জন্য চাষি মুখলেছুর রহমানকে বেশ পরিশ্রম করেতে হয়েঠেছ বলে জানান তিনি।

মুখলেছুর রহমান জানান, ড্রাগন চারা রোপনের এক থেকে দেড় বছরের মধ্য গাছ ফুল আসে। ফুল আসার পর বিশ-পঁচিশ দিনের মধ্যে ফল হয়। ইংরেজি এপ্রিল থেকে মে মাসে ফুল আসার সময় হলেও অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসেও ফুল ধরে এবং এ সময় ফল উঠানো যায়।

বারো-আঠারো মাস বয়সি গাছ হতে পাঁচ-বিশটি ফল উঠানো যায়। তবে প্রাপ্ত বয়স্ক একটি গাছ থেকে এক’শ টি পর্যন্ত ফল পওয়া যায়। প্রাতিটি ড্রাগন গাছ মোট বিশ বছর পর্যন্ত ফল দিয়ে থাকে। প্রতিটি ফলের ওজন হয় দুই’শ গ্রাম থেকে শুরু করে এক কেজি পর্যন্ত হয়।

বর্তমান বাজারের আলোকে প্রাতি কেজি ড্রাগন ফল পাঁচ’শ টাকা থেকে শুরু করে সাত’শ টাকা পর্যন্ত বিক্রি কারা যায়। সেই পরিসংখ্যানের আলোকে ফলন ধরলেই এই বাগান থেকে প্রথমবার তিনি দশ থেকে পনের লক্ষ টাকার ড্রাগন বিক্রি করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেন। ড্রাগন গাছে তেমন রোগ বালাই না থাকার কারণে বাগানে খরচও কম হয়ে থাকে। এতে করে অল্প খরচে অধিক লাভের আশা করা যায়। অল্প কিছু দিনের ভিতরে এই দুই বিঘা জমির সাথে আরো দুই বিঘা জমি সংযুক্ত করে বাগান বৃদ্ধি করা হবে বলে জানান মুখলেছুর রহমান।

মনোহরদী উপজেলা কৃষিকর্মকর্তা আয়েশা আক্তার জানান, এই এলাকার মাটি এবং আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য বেশ উপযোগী। আমরা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পক্ষ থেকে সর্বদা বাগানটি পরিদর্শন করে চাষিকে উপযুক্ত পরামর্শও দিয়ে যাচ্ছি। আশা করি মুখলেছের মাধ্যমে উপজেলার কৃষিতে ড্রাগন দিয়ে নতুন সম্ভাবনার সূর্য উদয় হবে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।