আমার মনে আছে রক্ত মাংসের ঘ্রাণ আর উলঙ্গ দেহের কান্না
মনে আছে পূর্ণিমা রাতেও শিশুটি কেঁদেছিলো মা মা বলে,
কাছে থাকা হারিকেনে জ্বলজ্বল করছিলো শিশুটির ঊর্ধ্বশ্বাস!
শিশুটির বাবা গেছে অচেনা শিবিরে ঝলসানো স্বপ্ন কিনতে,
বিস্তীর্ণ প্রান্তরে তিমির রাতে বিচিত্র রং-এ সমীর উঠোনে।
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে হঠাৎ সে নির্বিকার!
তার মা কোথায়? বাবা স্বপ্ন কিনেছে?
দু’দিন পর মূর্ত হয়ে ওঠে তার মা বাড়ির দিঘিতে,
বাবাকে সে দেখতে পায় লাল রংয়ের স্তবকে,
রক্তে আক্রোশ জাগে তার,
প্রতিশোধের পতাকা তার দু’হাতের মুঠোতে!
প্রাঞ্জল বিপ্লবে ফেটে পড়ে আকাশ-পাতাল,
আহত করে শত্রুর বন্দুক-কামান,
বুকে বারংবার ঠেসে বসে সংশপ্তক,
মায়ের বস্ত্রহীন দেহে ভাসে বন্দুকের বারুদ।
সে যুদ্ধ করে। চলে ৩ মাস।
মেঘের গর্জনকে উপেক্ষা করে,
ধর্ষিতার কান্না থেমে,
তীক্ষ্ণ বর্শার প্রতিশোধ শেষে-বাবার ঝলমলে ঝলসানো স্বপ্ন সে খুঁজে পায়।
ঊর্ধ্বে দু’হাত বাড়িয়ে আকাশ-বাতাস আন্দোলিত করে,
চোখে অনন্ত স্বপ্ন নিয়ে, বুকে বেয়নেটের বেয়াদবিতে আর্তচিৎকারে
আওয়াজ তুলে ‘জয় বাংলা, জয় বাংলা’
লাশ দাফন হলো, মুক্তি পেলো বন্দুক-বারুদ
প্রাণের জাহাজে ঢেউ তুলে বিমূর্ত তরঙ্গে স্বজনের ক্রোধ থামলো,
আকাঙ্ক্ষার তাপ বাষ্প হয়ে শূন্যে ভেসে গেলো,
শতশত শিশু স্বপ্ন খুঁজে পেলো,
কবিতার কৃষক, বৌদির মুখে হাসি ফিরে এলো,
আহত কবির গান হলো তীব্র আলোড়িত।