
সীমান্তবাংলাঃ
শিক্ষা শব্দের উৎপত্তি সংস্কৃত “শাস” ধাতু থেকে। সাধারণভাবে বলা যায় মানুষের আচরণের কাঙ্ক্ষিত, বাঞ্চিত এবং ইতিবাচক পরির্বতনই হলো শিক্ষা। যুগে যুগে নানা মনীষী নানাভাবে শিক্ষাকে সজ্ঞায়িত করেছেন। আবার সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার সজ্ঞা বা ধারণাও পরির্বতন এসেছে।
শিক্ষার বিভিন্ন ধাপ রয়েছে। উচ্চশিক্ষা হল তৃতীয় পর্যায়, বা পোষ্টসেকন্ডারি শিক্ষা, এটি একটি অ-বাধ্যতামূলক শিক্ষাগত স্তর যা উচ্চ বিদ্যালয় বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেমন স্কুল সমাপ্তি অনুসরণ করে । তৃতীয়তঃ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা সহ বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ কে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানত উচ্চ শিক্ষা প্রদান করে। সমষ্টিগতভাবে এইগুলি উচ্চ বিভাগ হিসাবে পরিচিত। উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা ব্যক্তি সাধারণত সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা, বা একাডেমিক ডিগ্রী প্রাপ্ত হয়ে থাকে ।
উচ্চ শিক্ষা সাধারণত একটি ডিগ্রী-স্তর বা ডিগ্রী যোগ্যতা জড়িত থাকে। বিশ্বের অধিকাংশ উন্নত দেশগুলিতে জনসংখ্যা (৫০% পর্যন্ত) এখন তাদের জীবনের কোন একটা সময় উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করে। জাতীয় অর্থনীতির জন্য উচ্চশিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, উভয়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং বাকি প্রশিক্ষিত এবং শিক্ষিত কর্মীরা অর্থনীতির উৎস হিসাবে গণ্য ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা, শিক্ষাদান, গবেষণা এবং সামাজিক সেবা কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে, এবং এটি স্নাতক পর্যায়ে উভয়ই অন্তর্ভুক্ত (কখনও কখনও উচ্চতর বিভাগ হিসাবে উল্লেখ করা হয়) এবং স্নাতক (বা স্নাতকোত্তর) স্তর (কখনও কখনও স্নাতক স্কুল হিসাবে পরিচিত)।
অনিন্দ্য সুন্দর, প্রকৃতির অপূর্ব সৌন্দর্যের পিরামিড, বিশ্বের দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন প্রাকৃতিক নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যের আধার, বালুকাময় সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার-বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত একটি জেলা সামুদ্রিক শহর, মৎস্য বন্দর এবং পর্যটন কেন্দ্র। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের কক্সবাজার জেলার সদর দপ্তর। এখানে রয়েছে বাংলাদেশের বৃহত্তম সামুদ্রিক মৎস্য বন্দর এবং সাবমেরিন ক্যাবল ল্যান্ডিং স্টেশন। এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি, উপমহাদেশের প্যারিস খ্যাত দেশের সর্ব দক্ষিণের জেলা শহর। কক্সবাজার চট্টগ্রাম শহর থেকে ১৫২ কি.মি. দক্ষিণে অবস্থিত। ঢাকা থেকে এর দূরত্ব ৪১৪কি.মি.।এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পর্যটন কেন্দ্রও বটে। দেশের রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক এবং আকাশপথে কক্সবাজার যাওয়া যায়। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার অবধি রেললাইন স্থাপনের প্রকল্প চলমান রয়েছে। আশা করা যাচ্ছে ২০২২ সালের মধ্যে ঢাকা থেকে সরাসরি ট্রেন চলাচল শুরু হবে।
সাগর-পাহাড়-বনভুমি-সমতল ভুমির সাথে আসমুদ্রহিমাচলের অপূর্ব মিতালী, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য, নানা ধর্মের-বর্ণের মানুষের অসাম্প্রদায়িক সহাবস্থান, পরিবেশ ও জীব বৈচিত্র্যের সমাহারসহ প্রকৃতির ভিন্নতর বৈশিষ্ট্যের কারণে কক্সবাজার একেবারেই অনন্য। বলা হয়, স্বাস্থ্যকর স্থান এবং প্রকৃতির নৈসর্গিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত কক্সবাজার।
কক্সবাজার বাংলাদেশের একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা, যেখানে উপজেলা আটটি/নয়টি, থানা আটটি/নয়টি, ইউনিয়ন ৭১টি, গ্রাম ৯৯২টি। ২০১১ সমীক্ষা অনুযায়ী আয়তন ২৪৯১.৮৬ বর্গ কি.মি. এবং নাগরিক প্রায় ২২,৮৯,৯৯০ জন বা প্রায় ২৩ লক্ষ। প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রায় ৯৫০ জন। সর্বশেষ ২০১৫ সালের এক সমীক্ষা অনুযায়ী- কক্সবাজারে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে ১টি, মেডিকেল কলেজ রয়েছে ১টি, স্নাতকোত্তর কলেজ ২টি, কামিল মাদ্রাসা ৪টি, ডিগ্রি কলেজ ১১টি, ফাজিল মাদ্রাসা ১২টি, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজ ১৯টি, আলিম মাদ্রাসা ১৯টি, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট ১টি। মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৪০টি, দাখিল মাদ্রাসা ১০৪টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৫২টি, প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭০১টি। জেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তালিকা দেখলে সহজেই বুঝা যায়, জনসংখ্যার তুলনায় উচ্চ শিক্ষার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা অতি নগণ্য। এই এলাকার শিক্ষার্থীদেরকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য পাড়ি জমাতে হয় প্রায় ১৬০ কিলোমিটার দূরে বিভাগীয় শহর চট্টগ্রামে।
বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন রাজধানী নামে খ্যাত কক্সবাজারকে আধুনিক নগরী ও পর্যটন শিল্প বিকাশে বর্তমান সরকার নানামুখী উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ প্রকল্প, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সম্প্রসারণ নির্মাণ কাজ, মহেশখালী মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, টেকনাফ সাবরাং ও জাইল্যারদিয়ায় ইকো ট্যুরিজম পার্ক নির্মাণ কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এগিয়ে চলেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ককে চার লেনের নির্মাণ কাজ। কিন্তু, কক্সবাজারের ২৩ লাখ মানুষের দীর্ঘদিনের গণদাবি ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রকল্পের কাজের কোনো সুখবর এখনও পর্যন্ত নেই।
শিক্ষার প্রতিটি স্তরসহ সব সেক্টরে অবদান রেখে চলেছে কক্সবাজারের অদম্য মেধাবী শিক্ষার্থীরা। নিজে সুশিক্ষিত হয়ে সারাদেশ এমনকি বিশ্বব্যাপী শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন অনেকজন। কক্সবাজারের রয়েছে অসংখ্য সম্ভবানময়ী মানবসম্পদ। রয়েছে দেশসেরা ব্যারিস্টার, ম্যাজিষ্ট্রেট, অ্যাডভোকেট, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কবি-সাহিত্যিক, লেখক-প্রাবন্ধিক, প্রতিষ্ঠিত সেরা ব্যবসায়ী, রয়েছে আরো কত স্বনামধন্য ব্যক্তিত্ব। আরো রয়েছে রাজধানীর সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা, দেশের সবচেয়ে পরিচ্ছন্ন শহর, আকর্ষণীয় পর্যটন নগরী, মনোরম পরিবেশ। একটি আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়ামও রয়েছে এই জেলায়। বিদ্যমান আকাশপথের পাশাপাশি শীঘ্রই চালু হচ্ছে মিটারগেজ রেলপথ। রপ্তানিযোগ্য হোয়াইট গোল্ড খ্যাত চিংড়ি, লবণ, সামুদ্রিক মাছ, মূল্যবান প্রাকৃতিক সম্পদ, শামুক, রাবার বাগান, বনজ সম্পদ ইত্যাদিতে ভরপুর অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময়। বিশ্বের সর্ববৃহৎ সমুদ্রসৈকত, শীতল পানির ঝর্ণা, বিরল কোরাল দ্বীপ সেন্টমার্টিন, রামু বৌদ্ধ মন্দির, আদিনাথ মন্দির, এবং দেশের প্রথম বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্র সহ ভ্রমন পিয়াসীদের প্রধানতম পছন্দ।
কক্সবাজারে রয়েছে হাজারো স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, পলিটেকনিক, মেডিকেল কলেজসহ আরো নানা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দুঃখজনক হলেও বাস্তব সত্য হচ্ছে, এতো অদ্বিতীয় সমন্বিত ও সম্ভাবনময়ী এলাকা হওয়া সত্ত্বেও এখানে কোন সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নেই। যেটি দারিদ্র্যপীড়িত ও সৃজনশীল, দেশপ্রেমিক আগামী প্রজন্মের জন্যে স্বশিক্ষিত হওয়ার প্রধান অন্তরায়। কক্সবাজার জেলার হাজারো শিক্ষার্থী শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। কিন্তু অকালে ঝরে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু হাজারো সম্ভাবনাময় শিক্ষার্থী। পারিবারিক দৈন্যদশা ও অস্বচ্ছলতার কারণে দীর্ঘ দিনের লালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে যাচ্ছে অনেক সম্ভাবনাময় জাতির মেধাবী শিক্ষার্থীর। এখন সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে কক্সবাজার একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা। সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষ ও বর্তমান সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার প্রতি আকুল আবেদন , কৃপা ও সুদৃষ্টি আকর্ষণ করছি, যেন কক্সবাজারে একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। আমি মনে করি যেটা কক্সবাজারের ২৩ লক্ষাধিক জনগোষ্টির বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা দাবী।
শিক্ষার অগ্রগতি, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নসহ আরও বেশকিছু যৌক্তিক কারণ তুলে ধরে কক্সবাজারে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবীতে সোচ্চার হয়ে উঠেছে কক্সবাজারের আপামর জনসাধারণ। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন ফোরামে এনিয়ে বিস্তর আলাপ আলোচনা চলছে। সেই সাথে সচেতন মহলেও এর স্বপক্ষে জোরালো দাবী তুলতে দেখা গেছে। সর্বশেষ গত ১৬ জানুয়ারী বৃহস্পতিবার মহান সংসদে দাঁড়িয়ে কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবী তুলেন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাংসদ জাফর আলম। মহামান্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের ভাষণের উপর আনীত ধন্যবাদ প্রস্তাবের উপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এই দাবী উত্থাপন করেন।
তাছাড়া আমরা প্রায় সকলেই জানি, গণমুখী শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকেই পরবর্তীতে মুক্তিযুদ্ধের ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে। সেই শিক্ষার অধিকার আদায়ের মহান আন্দোলনের আদর্শের অনুসরণে কক্সবাজার এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার দাবী নিয়ে কাজ করা ‘কক্সবাজার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় চাই’ নামক একটি পরিষদ গঠিত হয়েছে। এই কমিটি কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টার ব্যাপারে সরকারের উপর মহল থেকে শুরু করে আমজনতাকে সম্পৃক্ত করে গণ সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
কক্সবাজার এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে কক্সবাজার-৩ ( কক্সবাজার সদর-রামু) আসনের মাননীয় এমপি সায়মুম সরওয়ার কমল মহোদয় জানিয়েছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে মত প্রকাশ করেছেন কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য।তাছাড়া শিক্ষা উপ/প্রতিমন্ত্রী ব্যরিষ্টার মহিবুল হাসান নওফেল ও কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর কাজ চলমান বলে জানিয়েছিলেন কিন্তু বর্তমানে কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য কোন কার্যক্রমের আপডেট পাওয়া যাচ্ছে না এবং আমরা প্রস্তাবিত কক্সবাজারে এ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এর দ্রুত অনুমোদন ও বাস্তবায়ন চাই। আমাদের কক্সবাজার এখন সরকারিভাবে উচ্চ ব্যয়বহুল নগরী এবং পর্যটন শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় অঞ্চল। পৃথিবীর তাবৎ পর্যটন নগরী গুলোর দিকে খেয়াল করলেই আমরা দেখতে পাই, প্রত্যেকটি দেশের পর্যটন নগরী গুলোতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এ স্বয়ংসম্পূর্ণ। কিন্তু আমাদের দেশের পর্যটন নগরী সেই সুযোগ থেকে মারাত্মক ভাবে বঞ্চিত!!
কক্সবাজার তথা দক্ষিণাঞ্চলের জনগোষ্ঠী শিক্ষার দিক থেকে অনেক অনেক পিছিয়ে। আমাদের কক্সবাজারের শিক্ষার হার মাত্র ৪৯%, যা বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে ৬৩তম বলে জানা গেছে। এটি অত্যন্ত দৃষ্টিকটু ও লজ্জাজনক ব্যাপারও বটে। শিক্ষার হার বাড়ানোর জন্য এখানে প্রয়োজন আরো অনেক প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মহাবিদ্যালয়। উচ্চ শিক্ষার জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় সংকট শিক্ষা ব্যবস্থার প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারনা সৃষ্টি হচ্ছে মারাত্মকভাবে । এতবড় একটা জনগোষ্ঠীর কথা চিন্তা করে বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী আমাদের কক্সবাজারে যদি বিশ্বমানের গবেষণা ভিত্তিক একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে এখানকার শিক্ষার্থীরা বিশেষ করে মেয়েরা শিক্ষার ক্ষেত্রে অনেকটা এগিয়ে যাবে এবং জনসংখ্যা জনসম্পদে পরিণত হয়ে দেশ ও জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে!
কক্সবাজারে সামষ্টিকভাবে শিক্ষিতের হার সারাদেশে সর্বনিম্ন। তারমধ্যে নারী উচ্চ শিক্ষার হারে যোজন যোজন পিছিয়ে। এর মূল কারণ, কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকাকে আমরা মনে করি এবং অনেক দূরবর্তী জেলাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবস্থিত হওয়ার কারনে নারীশিক্ষায় পরিবারের অনীহা ও বাঁধা তো আছেই! তাই জেলায় শিক্ষাক্ষেত্রে নারী ও পুরুষ সমতা আনয়নের জন্য ও দ্রুত পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা অতি আবশ্যক। আমাদের বিস্তৃত সমৃদ্ধ সমুদ্র নিয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবন এবং বিভিন্ন তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে ভবিষ্যৎ করণীয় ও ব্লু ইকোনমি সৃষ্টি নিয়ে কক্সবাজারে উচ্চশিক্ষার জন্য ও দ্রুত মানসম্পন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা অতি গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরী হয়ে পড়েছে।
সর্বশেষ ও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে বর্তমান সরকারের কক্সবাজারে নেওয়া বহুমুখী উন্নয়নের মেঘা প্রকল্পগুলোতে অংশগ্রহণ ও ভুমিকা রাখতে কক্সবাজারের দক্ষ জনগোষ্ঠী অবশ্যই দরকার। সেই দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরীর কারখানা হলো বিশ্ববিদ্যালয়। আরেকটি দিক হলো জাতিসংঘের রিফিউজি ফান্ডের ২৫% থেকে ৩০% হোস্ট কমিউনিটির জন্য বরাদ্দ থাকে, সরকার চাইলে এই বরাদ্দ থেকেও সহজেই অতি দ্রুত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় কক্সবাজারবাসীকে দেশের স্বার্থে প্রতিষ্টা করে দিতে পারেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
এম আর আয়াজ রবি।
(লেখক, কলামিষ্ট ও মানবাধিকারকর্মী)
প্রকাশঃ ২৭ অক্টোবর ২০২০