সীমান্তবাংলা অনলাইন ডেস্ক ■ বর্তমানে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর সঙ্গে অন্যান্য রাজ্যগুলোতে ট্রেন চলে করে সিলিগুড়ি করিডোর দিয়ে। যা চিকেননেক নামে পরিচিত। ২২ কিলোমিটার প্রশস্ত এই করিডোরটি বাংলাদেশ ও নেপালের মাঝ বরাবর অঞ্চল দিয়ে বেয়ে গেছে।
বাংলাদেশের ওপর নিয়ে ভারতের রেলনেটওয়ার্ক তৈরির উদ্দেশ্য হলো ‘চিকেননেক’ নামের এই করিডোরটির ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কমানো।
সামরিক এবং বেসামরিক পণ্য পরিবহণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ‘চিকেননেক’ রেল করিডোরটি নিয়ে ২০১৭ সালে বেশ দু:শ্চিন্তায় পড়েছিল ভারত। ওই বছর ডোকলাম অঞ্চল নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে বিবাদ শুরু হয়। এই রেল করিডোরটি তখন বিবাদমান অঞ্চলের মাঝে পড়ে যায়। যা দেশটির জন্য চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এই প্রকল্পে বাংলাদেশকে যুক্ত করা ১৪টি নতুন রুট থাকবে। রুটগুলোতে সবমিলিয়ে রেললাইন থাকবে ৮৬১ কিলোমিটার। সঙ্গে থাকবে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে যাওয়া বিকল্প রুটটি। এতে করে এই প্রজেক্টে রেললাইন হবে ১ হাজার ২শ ৭৫দশমিক ৫ কিলোমিটার। প্রকল্পের অংশ হিসেবে পুরোনো রেললাইন বদলে নতুন রেললাইন স্থাপন করা। অপরদিকে বাংলাদেশে তৈরি করা হবে নতুন রেললাইন।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া আরও জানিয়েছে, ভারত বাংলাদেশে রেললাইন তৈরি করবে ১৯৮০ সালের বাণিজ্য চুক্তির সুবিধা চুক্তির অধিনে।
ভারতের নর্থইস্ট ফ্রন্টিয়ার রেলওয়ের সিপিআরও সব্যসাচি দে টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, “এটি কলকাতা থেকে উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যে যাওয়ার প্রচুর সময় কমিয়ে দেবে। এছাড়া এই রেল নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের সঙ্গে যোগাযোগেও সমৃদ্ধ করবে। এটি প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্য এবং পর্যটনখাত বৃদ্ধি করবে।”
পরীক্ষামূলক যাত্রার জন্য ভারতের সাম্প্রতিক প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তারা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে দেশটির এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় ট্রেন নিতে চায়। ভারত এর আগে প্রস্তাব দিয়েছিল,
পরীক্ষামূলক যাত্রার পণ্যশূন্য রেলগাড়ি ভারতের গেদে থেকে বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় আসবে। সেখান থেকে পাবনার ঈশ্বরদী, নাটোরের আব্দুলপুর, দিনাজপুরের পার্বতীপুর, নীলফামারী সীমান্তবর্তী চিলাহাটী স্টেশন হয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার হলদিবাড়ী স্টেশনে যাবে। তবে দেশটির নতুন প্রস্তাব অনুযায়ী ট্রেনটি হলদিবাড়ী থেকে যাবে ভুটান সীমান্তবর্তী ডালগাঁও স্টেশন পর্যন্ত।
ডালগাঁও পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার একটি স্টেশন। এ স্টেশন হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ার রেললাইন গেছে। এই লাইন উত্তর-পূর্ব ভারতের সাত রাজ্যকে যুক্ত করেছে দেশটির মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে।
ভূরাজনৈতিক কারণে এ রেলপথ ভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে দেশটির উত্তর-পূর্বগামী ট্রেন জলপাইড়গুড়ির ‘চিকেননেক’ করিডোর ঘুরে যায়। বাংলাদেশের দর্শনা-ঈশ্বরদী-আব্দুলপুর-পার্বতীপুর-চিলাহাটী হয়ে গেলে ৩০০ কিলোমিটার পথ কমবে। আসাম, ত্রিপুরা, মেঘালয়, মিজোরাম, মণিপুর, অরুণাচল রাজ্যের সঙ্গে বাকি ভারতের রেল যোগাযোগ সহজ হবে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া গত রোববার (১৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সীমান্তবাংলা/এমইউ/২০জুন২৪/