সীমান্ত বাংলাঃ কক্সবাজারের উখিয়ায় প্রায় অর্ধশত পয়েন্ট থেকে দিনরাত অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন চলছে। গাড়ী প্রতি ৩হাজার থেকে সাড়ে ৩হাজার টাকায় বেচা বিক্রির সুবাদে সরকারি বালি লুটপাটের মহোৎসব চলছে। পেশাদারী একশ্রেণীর বালি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রশাসন থেকে শুরু করে বিভিন্ন চাদাবাজ মহলকে ম্যানেজ করে প্রায় অর্ধশত স্পট থেকে অবৈধ উপায়ে বালি উত্তোলনের ফলে বন ও পরিবেশ ধ্বংসসহ সাধারন মানুষের চলাচলে রাস্তা অনুপযোগী করে জনজীবন অতিষ্ট করে তুলেছে।
সরজমিন ফলিয়া পাড়ার জারাইলতলী, মধুরছড়া, হলিণমারা, আমিন পাড়া, হরিণমারা বাগানের পাহাড়, বাঘঘোনা, তুতুরবিল, বালুখালী খাল, মনখালীর চিকুনছুরি খাল, ছোটখাল, বড়খাল, রেজুর মোহনা, মরিচ্যা খাল, রাজাপালং, হিজোলীয়া, গয়ালমারা খালের ১৫টি স্পটসহ ৫০টিরও অধিক স্থান থেকে শক্তিশালী সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত বালি উত্তোলন করে হাতিয়ে নিচ্ছে সরকারি লাখ লাখ টাকার রাজস্ব। মধুরছড়া এলাকার আবু ছৈয়দ (৪৫) এর অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল ঘুরে দেখা যায়, বাড়ী সংলগ্ন পাহাড়ের নিচে গর্ত করে সেখানে ডেজার মেশিন দিয়ে পানি উত্তোলনপূর্বক গর্ত পরিপূর্ণ করা হয়েছে। ফলে বালির পাহাড় ক্রমশ ভেঙ্গে পড়ছে। অপর দিকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালি উত্তোলন করে পাচার করা হচ্ছে।
অব্যাহত পাহাড়ের ভাঙ্গন ও বালি উত্তোলনের ফলে সরকারি বনভুমির পাহাড় ধসে পড়াসহ সামাজিক বনায়নের গাছপালা বিলীন হলেও মাসিক ১০ থেকে ২০ হাজার টাকার বিনিময়ে বন কর্মকর্তারা রয়েছে নিরব দর্শকের ভুমিকায়। বালি সিন্ডিকেটের অন্যতম গডফাদার মধুরছড়া গ্রামের শামশুল আলমের ছেলে বুজুরুজ, হাবিবুর রহমান, মৃত আবুল বলির ছেলে নুর মোহাম্মদ বলি, গফুর ড্রাইভারের ছেলে ইউছুপ, ছব্বির আহম্মদ, হরিণমারা এলাকার শাহজান মেম্বার, ছৈয়দ করিম, আকতার, পিটিং বদু, খালকাছা পাড়া গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান, হিজোলিয়ার হেলাল উদ্দিন, নুর মোহাম্মদসহ আরো অনেকে। ভারী যানবাহন দিয়ে বালি পাচারের ফলে গ্রামীন সড়ক ভেঙ্গে ক্ষত বিক্ষত হয়ে চলাচলের অনুপযোগি হওয়ার কারনে গ্রামবাসীরা প্রশাসনের ধারারে ধারে ঘুরছে।
ইজারাদার মোঃ শফি বলেন, উল্লেখিত বালি গডফাদাররা দোছড়ী খালের ইজারার পাস বই কৌশলে ছাপাখানা থেকে বের করে তার দস্তখত জাল করে বিভিন্ন ক্যাম্পে অবৈধ ভাবে বালি পাচার করে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এবাপারে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার ভুমিকে অবহিত করেছেন বলেও তিনি জানান।
সহকারী কমিশনার ভুমি মোঃ আমিমুল এহসান খান জানান, তিনি এ পর্যন্ত বেশ কয়েকটি স্থানে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে যা দেখেছেন তাতে সরকারি রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে লাখ লাখ টাকার বালি লুটপাটের সত্যতা পাওয়া গেছে। প্রায় অর্ধশত লোকজনকে অবৈধ বালি উত্তোলনের দ্বায়ে জরিমানা করা হয়েছে।
বন বিভাগের পাহাড় কেটে বালি উত্তোলন ও পাচারের ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে উখিয়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা তারিকুর রহমান জানান, লোকবল সংকটের কারনে তারা ইচ্ছা থাকা সত্বেও অবৈধ বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারছেন না। তবে প্রত্যক্ষদর্শী বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ জানিয়েছেন, বন ভুমির পাহাড় কেটে বালি ও মাটি পাচারের ক্ষেত্রে বন বিভাগের বিট কর্মকর্তারা নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে।
উখিয়া ক্রাইমনিউজ/ ২৪সেপ্টেম্বর ২০২০